
এনএনবি, ঢাকা
ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ
করেছে ভারত। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর ২০২৫) বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ রিয়াজ
হামিদউল্লাহকে তলব করে এ উদ্বেগের কথা জানায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ভারতীয় সময় দুপুর ১২টার দিকে রিয়াজ হামিদউল্লাহকে নয়াদিল্লিতে পররাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ে ডাকা হয়। সেখানে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব
(বিএম) বি শ্যাম।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক
নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির প্রেক্ষাপটে এই তলব করা হয়েছে। বৈঠকে ঢাকায় ভারতীয়
হাইকমিশনের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকায় কিছু ‘চরমপন্থী উপাদান’ প্রকাশ্যে ভারতীয় মিশনের
আশপাশে নিরাপত্তা সংকট তৈরির পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছে—যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ ধরনের হুমকি কূটনৈতিক সম্পর্কের জন্য মারাত্মক
ঝুঁকিপূর্ণ। এ বিষয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা
নেবে—এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করে নয়াদিল্লি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, বাংলাদেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনাকে
কেন্দ্র করে ‘চরমপন্থী উপাদানগুলোর’ মাধ্যমে যে ‘মিথ্যা বয়ান’ তৈরির চেষ্টা
চলছে, ভারত তা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করে। একই সঙ্গে এসব বিষয়ে অন্তর্বর্তী
সরকারের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে মন্ত্রণালয় জানায়, ঘটনাগুলোর কোনো
পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হয়নি এবং ভারত সরকারের সঙ্গে অর্থবহ প্রমাণও ভাগ করা
হয়নি—যা দুর্ভাগ্যজনক বলে উল্লেখ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে ভারত ও বাংলাদেশের জনগণের মধ্যকার ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা তুলে ধরে
বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের সময় গড়ে ওঠা এই বন্ধন পরবর্তীতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক
উদ্যোগ এবং মানুষে-মানুষে সম্পর্কের মাধ্যমে আরও শক্তিশালী হয়েছে। এই সম্পর্কের
ভিত্তিতেই ভারত বরাবরই বাংলাদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
পাশাপাশি, একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও
বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের আহ্বানও পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আশা প্রকাশ করেছে, বাংলাদেশ সরকার কূটনৈতিক
দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে দেশটিতে অবস্থিত ভারতীয় মিশনসহ সব বিদেশি কূটনৈতিক
পোস্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
উল্লেখ্য, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এই তলবের পেছনে জাতীয়
নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক নেতার ‘উসকানিমূলক’ মন্তব্যকে কারণ হিসেবে উল্লেখ
করা হলেও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এ বিষয়ে কোনো
উল্লেখ করা হয়নি।
COMMENTS