
এনএনবি ডেস্ক
নেপালের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী
হিসেবে শপথ নিয়েছেন। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫) সন্ধ্যায় শীতল নিবাসে
প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পৌডেল তাঁকে শপথ করান। এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো দেশটির
কোনো নারী প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাহী প্রধানের দায়িত্ব নিলেন তিনি। খবরটি
জানিয়েছে নেপালি গণমাধ্যম খবর হাব।
প্রেসিডেন্ট পৌডেল সংবিধানের ৬১ অনুচ্ছেদের অধীনে কারকিকে নিয়োগ দেন। ২০১৫
সালের সংবিধান কার্যকর হওয়ার পর এত দিন পর্যন্ত সরকারগুলো ৭৬ অনুচ্ছেদের
ভিত্তিতে গঠিত হলেও এবার আন্দোলনকারীদের দাবির প্রেক্ষিতে গঠিত অন্তর্বর্তী
সরকারের নেতৃত্ব পেলেন কারকি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা এটিকে একটি যুগান্তকারী
পরিবর্তন হিসেবে দেখছেন।
শুক্রবার দিনভর টানটান আলোচনার পর পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার
গঠনে প্রধান দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছায়। শীতল নিবাস ঘেরাওয়ের হুমকি থাকায় শেষ
পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে কারকির নিয়োগ নিশ্চিত করেন।
নেপালের রাজনৈতিক ইতিহাসে কারকির নেতৃত্বকে নতুন অধ্যায় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিশেষ করে, তরুণ প্রজন্ম আশা করছে তাঁর নেতৃত্বে দুর্নীতিবিরোধী শাসনব্যবস্থা
প্রতিষ্ঠা ও সাংবিধানিক সংস্কারের পথ সুগম হবে।
কে এই সুশীলা কারকি
১৯৫২ সালের ৭ জুন বিরাটনগরে জন্মগ্রহণ করেন সুশীলা কারকি। তিনি ছিলেন নেপালের
সর্বোচ্চ আদালতের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে তিনি
দায়িত্ব নেন।
২০১৭ সালের এপ্রিলে নেপালি কংগ্রেস ও মাওবাদী কেন্দ্র তাঁর বিরুদ্ধে অভিশংসন
প্রস্তাব আনলেও জনমতের চাপ ও সুপ্রিম কোর্টের আদেশে তা প্রত্যাহার করা হয়।
পেশাগত জীবনে কারকি শিক্ষকতা করেছেন, আইন বিষয়ে ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
ডিগ্রি এবং ভারতের বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনৈতিক বিজ্ঞানে
স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। নব্বইয়ের গণ-আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং
কারাবন্দী হন। পরবর্তীতে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তিনি কারা নামের একটি উপন্যাস
লেখেন।
২০০৮ সালে নেপাল বার অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র অ্যাডভোকেট হন কারকি। ২০০৯ সালে
সুপ্রিম কোর্টে অস্থায়ী বিচারপতি এবং এক বছর পর স্থায়ী বিচারপতি হন। ২০১৬ সালে
প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়ে দুর্নীতিবিরোধী কঠোর অবস্থানের জন্য ব্যাপক
পরিচিতি পান। তাঁর মেয়াদকালে দুর্নীতির মামলায় সাবেক মন্ত্রী জয়প্রকাশ গুপ্তকে
দোষী সাব্যস্ত করার মতো গুরুত্বপূর্ণ রায় দেন। ২০১৭ সালে বয়সসীমা পূর্ণ করায়
অবসরে যান তিনি।
COMMENTS