এনএনবি, ঢাকা
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-১ আসনে (মধুপুর-ধনবাড়ি) আসনে জাতীয়বাদী দল (বিএনপি) থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী লে. কর্নেল (অব.) মো. আসাদুল ইসলাম আজাদের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে প্রতিপক্ষ। মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে কর্নেল (অব.) আজাদ নিজের নির্বাচনী এলাকায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করার পর থেকে নানা অপপ্রচার শুরু করেন একই দলের প্রতিপক্ষরা।
আজাদের ঘনিষ্টদের অভিযোগ, বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী এবং সম্ভ্যাব্য প্রার্থী হিসেবে কোনো কর্মসূচি পালন করলেই প্রতিপক্ষরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে কথিত ফ্যাসিবাদের দোষর আখ্যা দিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ায়। গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের ১ বছর পূর্তি উপলক্ষে আজাদের নেতৃত্বে বিজয় মিছিল করার সময় প্রতিপক্ষ বাধা দেয়। পরিস্থিতি সামাল দিয়ে দলীয় স্বার্থে আজাদের অনুসারীরা শান্ত থকে। এরপরও সন্ত্রাসীরা আজাদের অফিসে হামলা চালায় এবং তার ছবি সম্বলিত ব্যানার ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলে।
স্থানীয়রা জানান, কর্নেল আজাদের পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তার আপন বড়ভাই আশরাফুল ইসলাম মাসুদ দীর্ঘদিন থেকে ৬নং মির্জাবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে তিনি উপজেলা বিএনপির যুগ্মসম্পাদক। তার বাবা মরহুম গোলাম মোস্তফা বিএনপির সদস্য এবং গ্রাম সরকার প্রধান ছিলেন। বিএনপি পরিবার হওয়ার কারণে চাকরিতে সব যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও শুধু আজাদকে পদোন্নতি না দিযে ২০১৬ সালে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।
কর্নেল আজাদের ঘনিষ্ঠরা অভিযোগ করেন, বিতর্কিত সেনা কর্মকর্তাসহ ৩ জন মিলে একটি জমি ক্রয় করেন। বিনিয়োগকারী হিসেবে যার যার ব্যাংক হিসাব থেকে জমির দাম অনুযায়ী নির্ধারিত অংশের টাকা পরিশোধ করেন এবং তাদের সবার নামে যৌথ দলিল হয়েছে। বিতর্কিত ওই সেনা কর্মকর্তা নিজের অর্থে কেনা জমি তার স্ত্রীর নামে দলিল করেছেন। পরবর্তীতে সরকার পরিবর্তন হলে সেই সেনাকর্মকর্তা গ্রেপ্তার হয়েছেন। ওই সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে আজাদের রাজনৈতিক কোনো সম্পর্ক নেই।
আজাদ চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পর মিরপুর এলাকায় একটি রিয়েল এস্টেট ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসায়ীক প্রয়োজনে তিনি সে সময় একজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বেশ বড় অঙ্কের টাকা ঋণ নেন। ওই ঋণের টাকার পরিমাণ বেশি হওয়ায় ওই ব্যবসায়ী আজাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একটি বিনিয়োগ চুক্তি করেন। সেই অনুযায়ী ঋণের টাকা ব্যাংকিং চ্যানেলে গ্রহণ করেন। আজাদের রিয়েল এস্টেটের ব্যবসার একটি জমি বিক্রি হওয়ার পরে বিনিয়োগকারীর ব্যাংক হিসেবে লভ্যাংশসহ ঋণের টাকা ফেরত দেন। বিনিয়োগকারীর অনুরোধ অনুযায়ী সে সময় চুক্তিতে গ্যারান্টর হিসেবে তৎকালীন একজন সেনা কর্মকর্তার নাম ছিল। ওই সেনা কর্মকর্তা ছিলেন আজাদের ব্যাচমেট। পরে তিনি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। ব্যাচমেট সেনাকর্মকর্তা গ্যারান্টার থাকায় অপপ্রচারকারী একটি পক্ষ আজাদকে ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ আখ্যা দিয়ে নানা ধরনের অপতথ্য ও গুজব ছড়াচ্ছে। বিশেষ করে ঋণ গ্রহণের সময় ব্যবসায়ীর সঙ্গে হওয়া চুক্তির কিছু ছবি এবং ওই বিতর্কিত সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে যৌথভাবে জমি ক্রয় এবং বিক্রির দলিলের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন। তারা বলার চেষ্টা করছেন, ওই বিতর্কিত সেনা কর্তকর্তার সঙ্গে আজাদের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে এবং তিনি ওই সেনা কর্মকর্তার ব্যবসায়িক অংশীদার। তারা আরও প্রচার করছে, ওই সেনা কর্মকর্তার কাছ থেকে আজাদ অনেক সম্পদের মালিক হয়েছেন। যার বিন্দুমাত্র সত্যতা নেই।
কর্নেল আজাদ বলেন, আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ইলিয়াস মোল্লা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি (এমপি) হিসেবে আমার একটি অনুষ্ঠানে আসেন। সেখানে আমিও উপস্থিত ছিলাম। অনুষ্ঠানটি ছিল একটি প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। পরে ইলিয়াস মোল্লার লোকজন ওই প্রকল্পের ব্যানার খুলে নির্বাচনের সময় তাদের একটি নির্বাচনী ব্যানার লাগায়। এখন সেই ঘটনার ছবি ছড়িয়ে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে বিভিন্ন মহল। আমাকে ঘিরে বলা হচ্ছে আমার সঙ্গে সাবেক এমপি ইলিয়াস মোল্লার ঘনিষ্ঠতা ছিল। অথচ এসব তথ্যের কোনো ভিত্তি নেই। তাই আমি এসব অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানাই।
COMMENTS