![]() |
রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্স, গাজীপুর; জেলা রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার (ইনসেটে) |
বিশেষ প্রতিনিধি
যুক্তরাজ্যের রয়েল ভেটেরিনারি কলেজের গবেষকরা প্রমাণ পেয়েছেন যে, জলহস্তীরা বিশালাকায় ও খুব ওজনদার প্রাণী হলেও এই প্রাণীরাও কখনো কখনো শূন্যে ভেসে থাকতে পারে; আর তাদের এই শূন্যে ভেসে থাকার ঘটনাটি ঘটে খুব দ্রুতগতিতে দৌড়ানোর সময়। এমনি খুব দ্রুতগতিতে দুর্নীতি করে আরাম-আয়েশে এক প্রকার শূন্যে ভেসে বেড়াচ্ছেন গাজীপুরের জেলা রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার। চাকরি জীবনের পুরোটা জুড়ে যৌথবাহিনীর অভিযানে ধরা, পুলিশি মামলা, দুর্নীতি দমন কমিশনের ফাঁক গলে লাগামহীন দুর্নীতি করে পরিণত হয়েছেন দুর্নীতির জলহস্তীতে। ‘ফ্রন্ট ডোর’ এবং ‘ব্যাক ডোর’ ব্যবহার করে তিনি টিকে আছেন বহাল তবিয়তে।
সম্প্রতি গাজীপুর সদর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সাব-রেজিস্ট্রার (কখনো ২য় যুগ্ম) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও দলিল লেখক মো. হালিম ভূঁইয়া কর্তৃক আইন অমান্য করে সরকারি জমি জাল কাগজপত্র দিয়ে ব্যক্তিমালিকানায় রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার প্রকাশিত সংবাদ ও সরাসরি তথ্য-প্রমাণ হাতে পেয়েও কোনও রকম ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বরং ঘাপটি মেরে থেকে দুর্নীতিকেই প্রশ্রয় দিচ্ছেন গাজীপুরের জেলা রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জামায়াত-বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতায় নিবন্ধন অধিদপ্তরে চাকরি নিয়ে যেখানেই পদায়ন পেয়েছেন সেখানেই পদে পদে অযোগ্যতা, ক্ষমতার অপব্যবহার, অসদাচরন ও পরিবার-পরিজন নিয়ে অসাধুতার বলয় তৈরি করে দুর্নীতির স্বাক্ষর রেখে বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন সাবিকুন নাহার। তার চিরাচরিত দুর্নীতির দৌড় চলছে এখন পাক-হানাদার বাহীনির বিরুদ্ধের প্রথম সশন্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলা গাজীপুরে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এসব দুর্নীতিগ্রস্ত সাব রেজিস্ট্রার ও জেলা রেজিস্ট্রারদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সরকারের কয়েকটি সংস্থা। দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে জানানো হয়েছে, দুর্নীতির বিষয়ে আমাদের অবস্থান জিরো-টলারেন্স। পেন্ডিং তদন্ত-অনুসন্ধানগুলো শেষ করার জন্য ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে গাজীপুরের জেলা রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহারের ছত্রছায়ায় জেলার বিভিন্ন সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে জাল কাগজপত্র দিয়ে সরকারি জমি ব্যক্তি মালিকানায় রেজিস্ট্রেশন, জমির শ্রেণি পরিবর্তন, জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে নামজারিকৃত জমির রেজিস্ট্রেশন এবং সংশ্লিষ্ট নানা কাজে অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ পদ্ধতিগত দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন তারা।
ঘটনাটি এমন ঘটেছে যে, সেই সময় কালের আইজিআর মজদার হোসেন তাকে রূপগঞ্জে বদলি করেন। কিন্তু চোরে শোনে না ধর্মের কাহিনি। অনিয়ম ও দুর্নীতির মহারানী রূপগঞ্জে গিয়েও তার কার্যক্রম চলমান রাখেন।
২০১৪ সালে রূপগঞ্জে ৪০৫২ এবং ৪৫২৭ নং দলিল সম্পাদন করেন তিনি। যেখানে সরকারের শত কোটি টাকা রাজস্ব হারায়, ফলাফল সেই ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত হন তৎকালীন ঢাকা জেলার জেলা রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার।
এখানেই দুর্নীতি ও অনিয়মের ইতি টানতে পারতেন জেলা রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার। কিন্তু না তিনি থেমে থাকেননি, ঢাকা জেলার গুলশান সাব রেজিস্ট্রার অফিসে জয়েন করে মাত্র সাত মাস চাকরি করে তিনি দুই কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ০৩/১১/২০১১ সালে একটি দলিল সম্পাদন করেন। দলির নাম্বার ৯১৫০ সেই দলিলের কারণেই ২০১৬ সালে রাজধানীর বনানী থানায় মামলা হয়।
এছাড়াও ৬৯৭৮, ৯৩৫৫ এবং ২৯২২ নাম্বারের দলিল সম্পাদন করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে সাবিকুন নাহার কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।
যুক্তরাজ্যের রয়েল ভেটেরিনারি কলেজের গবেষকরা প্রমাণ পেয়েছেন যে, জলহস্তীরা বিশালাকায় ও খুব ওজনদার প্রাণী হলেও এই প্রাণীরাও কখনো কখনো শূন্যে ভেসে থাকতে পারে; আর তাদের এই শূন্যে ভেসে থাকার ঘটনাটি ঘটে খুব দ্রুতগতিতে দৌড়ানোর সময়। এমনি খুব দ্রুতগতিতে দুর্নীতি করে আরাম-আয়েশে এক প্রকার শূন্যে ভেসে বেড়াচ্ছেন গাজীপুরের জেলা রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার। চাকরি জীবনের পুরোটা জুড়ে যৌথবাহিনীর অভিযানে ধরা, পুলিশি মামলা, দুর্নীতি দমন কমিশনের ফাঁক গলে লাগামহীন দুর্নীতি করে পরিণত হয়েছেন দুর্নীতির জলহস্তীতে। ‘ফ্রন্ট ডোর’ এবং ‘ব্যাক ডোর’ ব্যবহার করে তিনি টিকে আছেন বহাল তবিয়তে।
সম্প্রতি গাজীপুর সদর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সাব-রেজিস্ট্রার (কখনো ২য় যুগ্ম) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও দলিল লেখক মো. হালিম ভূঁইয়া কর্তৃক আইন অমান্য করে সরকারি জমি জাল কাগজপত্র দিয়ে ব্যক্তিমালিকানায় রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার প্রকাশিত সংবাদ ও সরাসরি তথ্য-প্রমাণ হাতে পেয়েও কোনও রকম ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বরং ঘাপটি মেরে থেকে দুর্নীতিকেই প্রশ্রয় দিচ্ছেন গাজীপুরের জেলা রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জামায়াত-বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতায় নিবন্ধন অধিদপ্তরে চাকরি নিয়ে যেখানেই পদায়ন পেয়েছেন সেখানেই পদে পদে অযোগ্যতা, ক্ষমতার অপব্যবহার, অসদাচরন ও পরিবার-পরিজন নিয়ে অসাধুতার বলয় তৈরি করে দুর্নীতির স্বাক্ষর রেখে বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন সাবিকুন নাহার। তার চিরাচরিত দুর্নীতির দৌড় চলছে এখন পাক-হানাদার বাহীনির বিরুদ্ধের প্রথম সশন্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলা গাজীপুরে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এসব দুর্নীতিগ্রস্ত সাব রেজিস্ট্রার ও জেলা রেজিস্ট্রারদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সরকারের কয়েকটি সংস্থা। দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে জানানো হয়েছে, দুর্নীতির বিষয়ে আমাদের অবস্থান জিরো-টলারেন্স। পেন্ডিং তদন্ত-অনুসন্ধানগুলো শেষ করার জন্য ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে গাজীপুরের জেলা রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহারের ছত্রছায়ায় জেলার বিভিন্ন সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে জাল কাগজপত্র দিয়ে সরকারি জমি ব্যক্তি মালিকানায় রেজিস্ট্রেশন, জমির শ্রেণি পরিবর্তন, জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে নামজারিকৃত জমির রেজিস্ট্রেশন এবং সংশ্লিষ্ট নানা কাজে অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ পদ্ধতিগত দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন তারা।
অনিয়মের ধারাপাত
২০০৮ সালে দোহারে যৌথবাহিনীর অভিযানে ধরা পড়েন বর্তমান গাজীপুরের জেলা রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার। যৌথবাহিনীর অভিযানে জাল-দলিল, ভূমির শ্রেণী পরিবর্তনের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠে আসে তার বিরুদ্ধে। সে সময় কালের আইজিআর মজদার হোসেনের অনুরোধে সেই যাত্রায় বেঁচে যান বর্তমান গাজীপুর জেলা রেজিস্ট্রার। কিন্তু নিজের দোষ চেপে গিয়ে সেই অপরাধে তার পিয়ন ও সহকারীকে জেলে যেতে হয়।ঘটনাটি এমন ঘটেছে যে, সেই সময় কালের আইজিআর মজদার হোসেন তাকে রূপগঞ্জে বদলি করেন। কিন্তু চোরে শোনে না ধর্মের কাহিনি। অনিয়ম ও দুর্নীতির মহারানী রূপগঞ্জে গিয়েও তার কার্যক্রম চলমান রাখেন।
২০১৪ সালে রূপগঞ্জে ৪০৫২ এবং ৪৫২৭ নং দলিল সম্পাদন করেন তিনি। যেখানে সরকারের শত কোটি টাকা রাজস্ব হারায়, ফলাফল সেই ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত হন তৎকালীন ঢাকা জেলার জেলা রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার।
এখানেই দুর্নীতি ও অনিয়মের ইতি টানতে পারতেন জেলা রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার। কিন্তু না তিনি থেমে থাকেননি, ঢাকা জেলার গুলশান সাব রেজিস্ট্রার অফিসে জয়েন করে মাত্র সাত মাস চাকরি করে তিনি দুই কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ০৩/১১/২০১১ সালে একটি দলিল সম্পাদন করেন। দলির নাম্বার ৯১৫০ সেই দলিলের কারণেই ২০১৬ সালে রাজধানীর বনানী থানায় মামলা হয়।
এছাড়াও ৬৯৭৮, ৯৩৫৫ এবং ২৯২২ নাম্বারের দলিল সম্পাদন করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে সাবিকুন নাহার কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।
এমনকি তার ছেলে ও তার ভাই ইয়ামিনকে দিয়ে অবৈধ দলিল ও অবৈধ টাকা লেনদেন করার পাশাপাশি করিয়েছেন দাপ্তরিক কাজও।
এছাড়াও কেরানীগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রার অফিসে গেলে তৎকালীন ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার এর ভাই ইয়ামিনের অবৈধ দলিল করার বিষয়টি উঠে আসে এবং গণমাধ্যমে নাম শুনেই তিনি রেজিষ্ট্রার বিল্ডিং এর পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যান।
দুদকের জাল
তৎকালীন ঢাকার জেলা রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার এবং তার পরিবার সদস্যদের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়। একই সঙ্গে সাবিকুন নাহারের স্বামী সৈয়দ মো: আলমগীর, ছেলে সৈয়দ মো: সামিন ইয়াসার, মেয়ে সাবাহও ইকরার সম্পদেরও তথ্য-উপাত্ত চাওয়া হয়। সংস্থার সহকারী পরিচালক জিএম আহসানুল কবির রেকর্ডপত্র চেয়ে চিঠি দেন। সাবিকুন নাহার ছাড়াও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিভিন্ন জেলা রেজিস্ট্রি অফিসহ সংশ্লিষ্ট ২৪টি দফতরে চিঠি পাঠানো হয়। নিবন্ধন অধিদফতরের এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ‘ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন’র অভিযোগ আনা হয়। চিঠিতে সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে উল্লেখিত ব্যক্তিবর্গের নামে কোনো জমি/প্লট/ফ্ল্যাট/বাড়ি/দোকান ইত্যাদি রেজিস্ট্রেশন থাকলে বিনা খরচে দলিলের সার্টিফাইড কপি অনুসন্ধান কর্মকর্তার হাতে পৌঁছানোর অনুরোধ জানানো হয়। সাবিকুন নাহারের ঠিকানা-ফ্ল্যাট-এ/২,বাড়ি নং-৩৭, রোড-১০/এ, ধানমন্ডি, ঢাকা এবং স্থায়ী ঠিকানা, শাক্তা (পশ্চিম পাড়া), কেরাণীগঞ্জ, ঢাকার ঠিকানায় নোটিশটি পাঠানো হয়েছে।দুদক সূত্রে জনা যায়, বর্তমান গাজীপুরের জেলা রেজিস্ট্রার ও সাবেক ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহারের বিরুদ্ধে রয়েছে ঘুষ, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিপুল অর্থ-সম্পদ অর্জনের অভিযোগ। দীর্ঘদিন সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে প্রায় প্রত্যেকটি সাব রেজিস্ট্রি অফিসে রেখে এসেছেন দুর্নীতির স্বাক্ষর। কমিশনে দলিল সম্পাদন, জমির শ্রেণী পরিবর্তন, জাল দলিল সম্পাদন এবং ‘খাড়া দলিল’ সম্পাদনে তিনি নিতেন মোটা অংকের ঘুষ। ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার হওয়ার আগে তিনি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার। এরও আগে তিনি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রার। এ সময় তিনি সরকারি ফি’র অতিরিক্ত দলিল প্রতি লাখে ৩০০ টাকা নিতেন। দলিল লেখক সমিতির নামে দিতে হতো দলিলপ্রতি ৮শ’ টাকা করে। পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দলিলে কোনো ফি না থাকলেও তিনি দলিলপ্রতি ১৫শ’ টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা নিতেন। হেবা দলিলেও ছিল না কোনো ফি। কিন্তু সাবিকুন নাহার নিতেন ১৫শ’ টাকা করে। বণ্টননামা দলিল রেজিস্ট্রিতে নিতেন ৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। কোনো দলিলে পর্চার মূল কপি না থাকলে ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে তিনি ফটোকপি দিয়েও রেজিস্ট্রি করতেন। নকল তুলতে দলিল প্রতি ভেন্ডার নিতেন ২ হাজার টাকা করে। এখান থেকে ৫শ’ টাকা বখরা পেতেন সাবিকুন নাহার। রূপগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রি অফিসে মাসে গড়ে দলিল হতো ১২শ’টি। এই হারে সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে সাবিকুন নাহারের মাসিক আয় ছিল ৫০ লাখ টাকার বেশি। জেলা রেজিস্ট্রার হিসেবে পদোন্নতি নিয়ে অব্যাহত রাখেন ঘুষ বাণিজ্য। কর্মকর্তা-কর্মচারি, দলিল লেখক এবং নিকাহ রেজিস্ট্রারদের কাছ থেকে তিনি ঘুষ নিতেন অভিনব কায়দায়। তার অধীনস্থ ঢাকা সদর,কেরাণীগঞ্জ, গুলশান, তেজগাঁও, মোহাম্মদপুর, সূত্রাপুর, উত্তরা, বাড্ডা, আশুলিয়া, খিলগাঁও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ঘুষ ছাড়া কাজ হয়নি। জেলা রেজিস্ট্রার টাইপিস্ট শরীফের মাধ্যমে মো: রফিকুল ইসলাম নামক ব্যক্তির কাছ থেকে নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেয়ার কথা বলে ১৮ লাখ টাকা ঘুষ নেন। পরে রফিকের পরিবর্তে প্যানেলে তৃতীয় অবস্থানে থাকা ব্যক্তির কাছ থেকে অধিক টাকা ঘুষ নিয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়।
২০২২ সালের জানুয়ারিতে খিলগাঁও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের অফিস সহকারী মো: রাসেল মিয়াকে মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে বাড্ডা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে পদায়ন করেন। অফিস সহকারী তুহিনকেও পদায়ন করেন মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে। গত কয়েক বছরে তিনি দেড় শতাধিক নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি ও প্রেষণে নিয়োগ দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। সেসময় তিনি অন্তত ৪০ জন মোহরার, টিসি মোহরার ও অফিস সহকারী বদলিসহ ১১ জন অফিস সহকারীকে বিভিন্ন অফিস থেকে এনে ঢাকা সদরের রেকর্ডরুমে পদায়ন করেন। তিনি একই চেয়ারে দীর্ঘদিন থেকে মন্ত্রী, পদস্থ আমলা এবং সরকারদলীয় প্রভাবশালী নেতাদের নাম ভাঙিয়ে বদলি বাণিজ্য করেছেন। তিনি চলেন বিলাসবহুল গাড়িতে। নিজ এলাকা কেরাণীগঞ্জের শাক্তায় রয়েছে শত কোটি টাকার সম্পত্তি। রাজধানীর হাতিরপুল, গুলশান ও উত্তরায় রয়েছে একাধিক বাড়ি ও ফ্ল্যাট। ধানমন্ডির রোড নং-৯-এ, ১৫ কাঠা প্লটের ওপর নির্মাণ করেছেন ‘গোলাপ ভিলা-১’ এবং ‘গোলাপ ভিলা-২’ নামে ৮ তলা বাড়ি। নামে-বেনামে তার রয়েছে মার্কেট, দোকান এবং স্বর্ণের ব্যবসা। তার স্বামী সৈয়দ মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন মৎস্য অফিসার হিসেবে কেরাণীগঞ্জে কর্মরত রয়েছেন। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে সংস্থাটি। এর আগে বিগত কমিশন আমলে সাবিকুন নাহারের দুর্নীতি এবং অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান এক সময় নথিভুক্ত হয়ে যায়। এ প্রেক্ষাপটে বর্তমান কমিশন নতুন করে অনুসন্ধান শুরু করেছে বলে জানা গেছে।

দুর্নীতি ঢাকতে ‘সততার সম্মাননা স্মারক’ নাটক
গত ১৪ মার্চ ২০২২ রাজধানীর তেজগাঁওস্থ রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সের কনফারেন্স হলে সাবিকুন নাহার তার অধিনস্ত কর্মচারিদের বেসরকারি সংগঠন বাংলাদেশ রেজিস্ট্রেশন এমপ্লয়িজ এসোসিয়েশন থেকে ‘সততার সম্মাননা স্মারক’ নামে একটি পদক গ্রহণ করেন। ওই পদকটিতে অবৈধভাবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের লোগো ব্যবহার করা হয়। জানা গেছে, শুধু মাত্র ‘সততা’র সার্টিফিকেট দেখাতে সংগঠনটির ঢাকা জেলা শাখার নামে আয়োজিত অনুষ্ঠানটির সমস্ত খরচ বহন করেন সাবিকুন নাহার। দুর্নীতি ঢাকতে ‘সততার সম্মাননা স্মারক’ নাটক করে সাবিকুন নাহার ওই সময় ব্যাপক বিতর্কিত হন।
আইন মন্ত্রীর আনুকূল্য পাওয়ার চেষ্টা
অনিয়মের দায়ে সাসপেন্ড হওয়া রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার আনুকূল্য পেতে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি আইন মন্ত্রীকে তার গুলশানের অফিসে ফুল দিয়েও সমালোচনার শিকার হন।চলবে ...
COMMENTS