অমি দেব, কুবি
মানবজীবনের একমাত্র ব্রত হল 'সেবা '। মানব হৃদয়ের সব তৃপ্তি, সুখ ও সাফল্য সেবার মধ্যেই নিহিত। এই 'সেবা' মূলমন্ত্র নিয়ে ১৯০৭ সালে ইংল্যান্ডের ব্রাউন সি দ্বীপে রবার্ট স্টিফেনশন স্মিথ লর্ড ব্যাডেন পাওয়েল অব গিলওয়েলের হাতধরে গড়ে উঠেছিল স্কাউট আন্দোলন। মাত্র ২০ জন কিশোর নিয়ে যাত্রা শুরু করে স্কাউট। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ২২ লক্ষাধিক স্কাউট রয়েছে। সংখ্যাগত দিক থেকে বাংলাদেশ ৫ম অবস্থানে রয়েছে। আর এই সেবা করার লক্ষ্য নিয়ে ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় রোভার স্কাউট আজ এক দশকে পা দিয়েছে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর (যদিও এ অঞ্চলে ১৯১৪ সালে স্কাউটিং কার্যক্রম চালু ছিল) ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ স্কাউট অ্যাসোসিয়েশন নামে জাতীয় পর্যায়ে স্কাউটিং এর সংগঠন গড়ে ওঠে। ১৯৭৮ সালে এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় 'বাংলাদেশ স্কাউট'। বর্তমানে বাংলাদেশের স্কাউট ১৩টি অঞ্চলে বিভক্ত। যার মধ্যে রোভার অঞ্চল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং মুক্তদল নিয়ে গঠিত।
দেখতে দেখতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোভার স্কাউটের এক দশক পূর্ণ হলো। ২১ ডিসেম্বর ২০১৪ সালে কুবির রোভার স্কাউট গ্রুপ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে ২ টি ইউনিটের মোট সদস্য সংখ্যা ৪৫০ জনের অধিক। প্রতিবছর সহচর পর্যায়ে আবেদনের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে অর্ধশতাধিক নতুন রোভার সদস্য নির্বাচন করা হয়।
বর্তমানে ইউনিটের রোভার লিডার ও গ্রুপ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জনাব মো. জিয়া উদ্দীন এবং গার্ল- ইন রোভার স্কাউট লিডার জনাব ড. জান্নাতুল ফেরদৌস। বর্তমানে সিনিয়র রোভারমেটের দায়িত্ব পালন করছেন মো. তোফাজ্জল হোসেন ও গার্ল-ইন ইউনিটের গার্ল-ইন সিনিয়র রোভারমেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নাছরিন আক্তার।
রোভার স্কাউট লিডার ও গ্রুপ সম্পাদক, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জনাব মো. জিয়া উদ্দীন বলেন, 'রোভার স্কাউট একটা আন্তর্জাতিক সংস্থা। এটির কাজই হচ্ছে সমাজে সেবা প্রদান, দেশের উন্নয়ন ও নিজেকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা। পাশাপাশি রাষ্ট্রের প্রতি যে দায়িত্ব তা সঠিক ভাবে পালন করা এবং যে প্রতিষ্ঠানে থাকে সে প্রতিষ্ঠানে বেশ কিছু সহযোগিতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা।'
তিনি আরও বলেন, '২০১৪ সালে কুবির রোভার স্কাউট যখন যাত্রা শুরু করে তখন হয় তো খুব বেশি সুযোগ– সুবিধা ছিল না। আমরা এক্কেবারে খুব অনানুষ্ঠানিক ভাবে শুরু করেছি। রোভার স্কাউটের একটা দল গঠন করতে গেলে বাংলাদেশ স্কাউট থেকে অনুমোদনের দরকার হয়। সে অনুমোদনটাও আমরা তখনো পাইনি। কিন্তু আমরা আমাদের কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছিলাম। এমন কিছু শিক্ষার্থী আমরা পেয়েছিলাম যাদের কর্ম স্পৃহার কারণে আজ রোভার স্কাউটের অগ্রগতি। যখন আমরা শুরু করি তখন আমাদের কোনো অফিস ছিল না, কোনো আর্থিক প্রণোদনাও ছিল না। তারপরেও আমরা রোভার স্কাউটের কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। পরবর্তীতে আমরা কেন্দ্রীয় ভাবে অনুমোদন পাই। বর্তমানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় রোভার স্কাউট যে কৃতিত্ব দেখাচ্ছে তা আমাদের একটা বড় অগ্রগতি ও আমাদের পাওয়া।'
COMMENTS