গোলাম সারোয়ার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
বেশ জমজমজমাট হয়ে উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুরের শুঁটকি পল্লী ।
তিতাস, মেঘনা নদীসহ বিস্তীর্ণ হাওড়াঞ্চল থেকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ সংগ্রহ করে প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি হচ্ছে শুঁটকি। এসব শুঁটকি ভারত ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়।
শুঁটকি প্রক্রিয়াকরণের সাথে জড়িতরা জানান, উৎপাদন ব্যয় বাড়লেও শুঁটকির দাম না বাড়ায় বর্তমানে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতির আশঙ্কায় ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি প্রতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ২’শ কোটি টাকার শুঁটকি উৎপাদন হবে যার অর্ধেকই লালপুরের শুঁটকি পল্লী থেকে উৎপাদিত হবে।
মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে, শুঁটকি ব্যবসাকে লাভবান করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার কথা। বাংলাদেশে মিঠা পানির শুঁটকির একটি বড় অংশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় উৎপাদিত হয়। জেলা সদর ছাড়াও নাসিরনগর ও আশুগঞ্জ উপজেলার প্রায় আড়াইশ মাঁচায় এখন চলছে শুঁটকি প্রক্রিয়াকরণের কাজ। এর মধ্যে লালপুরে রয়েছে প্রায় ৯০টি মাঁচা।
তিতাস, মেঘনা নদীসহ বিস্তীর্ণ হাওরাঞ্চল থেকে সংগৃহীত মাছ প্রক্রিয়া করণের মাধ্যমে এখানে তৈরি হচ্ছে পুঁটি, শোল, গজার, বাইম, বজুরি, টেংরা, বৈচা বোয়াল সহ জাতের শুঁটকি। এসব শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সহস্রাধিক নারী-পুরুষ।
প্রক্রিয়াকরণের সাথে জড়িতরা জানালেন, আশ্বিন থেকে শুরু করে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত প্রায় ছয় মাস ধরে চলে এখানে শুঁটকি তৈরির কাজ। এখানকার শুঁটকি নিরাপদ ও প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হওয়ায় সারা দেশের পাশাপাশি দেশের বাইরেও এর কদর রয়েছে।
ক্ষুদ্রঋণ ও দাদনের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় পুঁজি সংকটে ভুগছে এ পেশায় জড়িতরা। পাশাপাশি বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বেশি দামে মাছ কিনতে হচ্ছে।
এছাড়া শুঁটকি প্রক্রিয়াকরণের অন্যতম উপাদান লবনসহ অন্যান্য উপকরণের দামও বেড়ে গেছে। এতে কাঙ্ক্ষিত লাভ না হওয়ায় বর্তমানে এ পেশায় টিকে থাকতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
মৎস্য অফিস জানিয়েছে, মৎস্য খাতকে কৃষিঋণ নীতিমালার আওতাভুক্ত করে এ পেশায় নিয়োজিতদের ঋণ সহায়তার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে জেলায় প্রায় ২ হাজার ৫০০ মে. টন শুঁটকি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে টাকার অঙ্কে যা প্রায় ২’শ কোটি টাকা।
নিরাপদ শুঁটকি তৈরির পাশাপাশি শুঁটকি ব্যবসায়ীদের লাভবান করতে শুঁটকি উৎপাদনকারীদের নানা সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্টরা উদ্যোগী হবেন সকলের এমনটাই প্রত্যাশা ।
COMMENTS