![]() |
ভারতের নতুন তিন আইনে বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। |
অনলাইন ডেস্ক
ব্রিটিশ আমলের তৈরি ফৌজদারি আইন বাতিল করে নতুন তিনটি ফৌজদারি আইন কার্যকর করতে
চলেছে ভারত।
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪) দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই
নতুন তিন আইন আগামী ১ জুলাই থেকেই কার্যকর হতে যাচ্ছে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ফলে
ভারতীয় আইন ব্যবস্থা থেকে পুরোপুরি মুছে যাবে ব্রিটিশ আমলে তৈরি হওয়া আইনগুলো।
দেশটির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু গত বছরের ডিসেম্বরে নতুন এই তিন আইনে সম্মতি
দিয়েছিলেন। আর এই তিন আইন হল, ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা
সংহিতা, এবং ভারতীয় সাক্ষ্য আইন।
১৮৬০ সালে তৈরি ‘ইন্ডিয়ান পেনাল কোড’ (ভারতীয় দণ্ডবিধি) প্রতিস্থাপিত হবে ‘ভারতীয়
ন্যায় সংহিতা’ দিয়ে। ১৮৯৮ সালের ‘ক্রিমিনাল প্রসিডিওর অ্যাক্ট’ (ফৌজদারি
দণ্ডবিধি) প্রতিস্থাপিত হবে ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা’ দিয়ে এবং ১৮৭২ সালের
‘ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট’র বদলে আসতে চলেছে ‘ভারতীয় সাক্ষ্য আইন।’
গত বছরের ১১ আগস্ট সংসদের বাদল অধিবেশনের শেষ দিনে ভারতের কেন্দ্রীয়
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লোকসভায় তিনটি বিল পেশ করেন। বিল পেশের সময় তিনি দাবি
করেছিলেন, ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং সাক্ষ্য আইন
শীর্ষক ওই তিনটি আইন থেকে ‘ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ জমানার প্রভাব এবং দাসত্বের
মানসিকতা’ দূর করবে।
যদিও দেশটির রাজনৈতিক দল কংগ্রেসসহ অন্য বিরোধী দলগুলো তড়িঘড়ি করে বিল পাশের
বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু বিল পাশ করতে বেগ পেতে হয়নি ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)
নেতৃত্বাধীন সরকারকে। ওই বিলে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সইও করেন। এবার সেই নতুন
আইনই কার্যকর করতে যাচ্ছে দেশটি।
ভারতের এই নতুন তিন আইনে বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। কিছু
নিয়মে বদলও আনা হয়েছে। নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে আরও কঠোর
সাজার বিধান রয়েছে নতুন আইনে।
নতুন আইনে ১৮ বছরের কম বয়সী কিশোরীকে ধর্ষণের সাজা মৃত্যুদণ্ড অথবা আজীবন
কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আর গণধর্ষণের ক্ষেত্রে ২০ বছর থেকে আজীবন
কারাদণ্ডের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এমনকি নারী গলার চেইন বা মোবাইল ছিনতাইয়ের মতো
ঘটনার বিচারের জন্য বিধান যুক্ত রয়েছে নতুন আইনে।
এ ছাড়া যৌন সহিংসতার মামলার ক্ষেত্রে নির্যাতিত নারীর বয়ান তার বাড়িতে একজন নারী
ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে নথিবদ্ধ করার কথাও বলা হয়েছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা আইনে।
এতে বিয়ে বা চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে নারীদের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের অপরাধের জন্য
১০ বছরের সাজার কথা বলা হয়েছে। নতুন আইনে সন্ত্রাসবাদ এবং রাষ্ট্রদ্রোহের মতো
অপরাধের ক্ষেত্রেও আরও কঠোর সাজার বিধান রয়েছে। এতে সম্মতিক্রমে বিবাহবহির্ভূত
সম্পর্ক, সমকামিতা এবং আত্মহত্যার চেষ্টাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য না করার বিধান
যুক্ত করা হয়েছে।
COMMENTS