সাইফুল ইসলাম, মেহেরপুর
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কােল ঘেঁষে বয়ে চলা মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর গার্ডার সেতু নির্মাণের ৩বছর পার হলেও সেতুর এক অংশের সংযোগ সড়ক নির্মাণ এখনও হয়নি। সংযােগ সড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় বন্ধ আছে সড়কের কাজ। যার ফলে ৯ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে মেহেরপুরের গাংনী ও কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মানুষকে।
গাংনী উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে উপজেলার বামন্দী এইচডি থেকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের প্রাগপুর জিসি ভায়া মধুগাড়ি ঘাট সড়কের মাথাভাঙা নদীর ওপর গার্ডার সেতু নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২০সালের প্রথম দিকে । আর এ সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৭ কোটি ২৯ লাখ ৩২ হাজার ৯৭৯ টাকা। সেতুটি নির্মাণের ফলে মেহেরপুর ও কুষ্টিয়ার ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ও শিক্ষা-দীক্ষাসহ নানা সুবিধা পাবার কথা । কিন্তু ২০২৩ সালে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হলেও আজো সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। ফলে জনগণের ভােগান্তি থেকেই রয়েছে ।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের মধুগাড়ী গ্রামের কৃষক আব্দুল ওহাব জানান,নদী পার হয়ে গাংনীর বেতবাড়ীয়া গ্রামের মাঠে কাজ করতে যায় বহু বছর ধরে। দীর্ঘ বছর ধরে আমরা মাথাভাঙা নদীর উপর দিয়ে বয়ে চলা নৌকায় টাকার বিনিময়ে ওপারে যেতাম। কিন্তু সে নৌকা এখন নেই। যার কারণ হচ্ছে নদীতে সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। তবে সেতুর পাশের এক অংশে সংযােগ না থাকায় ভােগান্তি বেড়েছে।
গাংনীর বামন্দীর ইলেক্ট্রিক কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধি মাহফুজ আলী জানান, বেশ কয়েক বছর যাবত আমি নদী পার হয়ে যাতায়াত করে আসছিলাম। নদীর উপর সেতু নির্মাণ হয়েছে, এ কারণে ভেবেছিলাম যাতায়াতের দুর্ভােগ এবার হয়তাে কমলাে। কিন্তু দু:খের কথা, সেতু নির্মাণের পর সংযোগ সড়ক না থাকায় যাতায়াত করতে পারছিনা।
একই কথা জানালেন দৌলতপুরের তেকালা গ্রামের রাজমিস্ত্রী নুর ইসলাম।
তিনি জানান, ৫ বছর ধরে রাজমিস্ত্রীর কাজ করে আসছি। আগে নৌকা ছিল কিন্তু সেতু নির্মাণের পর আর নৌকা চলে না। এখন গাংনী এলাকায় আসতে হলে ৮-৯ মাইল ঘুরে আসতে হয়।
গাংনী উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী ফয়সাল আহমেদ বলেন,সেতু নির্মাণের আগে স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করেই কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়। তবে বর্তমান সেতুর কাজ শেষ করে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে গেলে যারা জমি দিতে চেয়েছিলেন তারা বর্তমানে আপত্তি জানাচ্ছেন। তারা বাজার মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ দাম চাচ্ছেন। তাই ভূমি অধিগ্রহণের সকল ধরণের নথি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছি। মন্ত্রণালয় অনুমােদন করলে,আশা করি সড়ক নির্মাণের পর সেতুটি চালু মধ্যে দিয়ে জনগণের ভােগান্তি দূর হবে।
COMMENTS