উদযাপনে ব্যস্ত প্রোটিয়ারা। |
স্পোর্টস ডেস্ক
দক্ষিণ আফ্রিকার পেসারদের সামনে সকালের সেশনেই ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনে ১৪ ওভারে খেলতেই শেষ পরের ৪ উইকেট। ৪০.১ ওভারে মাত্র ১০৬ রানে অলআউট বাংলাদেশ। ১০৬ রান মিরপুর টেস্টের এক ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। সবচেয়ে কম রানে অলআউট হওয়ার বিব্রতকর রেকর্ডটাও বাংলাদেশের, ২০২১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৮৭।
বাংলাদেশ ইনিংসের সর্বোচ্চ ২৮ রানের জুটিটা আসে নবম উইকেটে, দুই স্পিনার তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসানের সৌজন্যে। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৩০ রান আসে ওপেনার মাহমুদুল হাসানের ব্যাট থেকে। কাগিসো রাবাদা, কেশব মহারাজ ও উয়াইন মুল্ডার নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট।
প্রোটিয়াদের উইকেট শিকারের উৎসব শুরু হয় সাদমান ইসলামকে দিয়ে। দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলে নিজের ইনিংসের প্রথম শটটা খেলার চেষ্টা করেন সাদমান। মুল্ডারের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলটি অ্যাঙ্গেলে বেরিয়ে যাচ্ছিল। সেই বলে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ তোলেন। ভুল শট খেলে ০ রানে ড্রেসিংরুমে ফিরে যান তিনি।
বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনে নামা মুমিনুল হকও। মুল্ডারের দ্বিতীয় ওভারের ফুল লেংথের বল লেগের দিকে ফ্লিক করতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হন ৪ রান করা মুমিনুল।
দক্ষিণ আফ্রিকার তরুণ অলরাউন্ডার মুল্ডার সেখানেই থামেননি। পরের ওভারে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুলকে স্ট্রাইকে পেয়ে রাউন্ড দ্য উইকেটে আসেন। ওই অ্যাঙ্গেল থেকে আসা বলে এর আগে বেশ কয়েকবার আউট হওয়া নাজমুল আজও মুল্ডারের ভেতরে ঢোকা বল অন সাইডে খেলতে গিয়ে কেশব মহারাজকে ক্যাচ দেন। ৭ বলে ৭ রান করে থামে তাঁর ইনিংস। ৬ ওভারে ২১ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। ৩টিই নেন মুল্ডার।
পরের ধাক্কাটা আসে তারকা ফাস্ট বোলার কাগিসো রাবাদার করা ১৪তম ওভারে। পানি পানের বিরতির পর আক্রমণে ফিরেই ভালো লেংথ থেকে ভেতরে ঢোকা বলে বোল্ড হন ২০ বলে ১১ রান করা মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানকে আউট করে দক্ষিণ আফ্রিকার ষষ্ঠ বোলার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ৩০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন রাবাদা।
রাবাদার সেই স্পেল পর্যন্ত টিকতে পারেননি লিটন দাসও। ২০তম ওভারে বাড়তি বাউন্স মেশানো বলে গালিতে ক্যাচ তোলেন লিটন, সেখানে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন ট্রিস্টান স্টাবস। ১৩ বলে ১ রান করে আউট হন লিটন; ৫০–এর আগে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ।
মধ্যাহ্ন বিরতির আগে আরেকটি উইকেট হারায় স্বাগতিকেরা। এবার বোলার কেশব মহারাজ। ২৬.১ ওভারে মহারাজের আর্ম বলে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন মিরাজ। তিনি ২৪ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ১৩ রান করে আউট হন। ষষ্ঠ উইকেট পড়ার সঙ্গে সঙ্গে মধ্যাহ্ন বিরতি দেওয়া হয়।
বিরতির পরও ভাগ্য বদলায়নি বাংলাদেশের। প্রথম সেশনে সতীর্থদের উইকেট পতনের দৃশ্য নন স্ট্রাইক প্রান্ত থেকে দেখতে থাকা ওপেনার মাহমুদুল বিরতির পর ডেন পিটের বলে লেট কাট খেলতে গিয়ে বোল্ড হন। পরের ওভারে মহারাজকে ক্রিজ ছেড়ে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হন অভিষিক্ত জাকের আলী।
বাংলাদেশের স্কোরটা এরপর ১০০ পার করিয়ে দিয়েছেন নাইম এবং তাইজুল। দুজনের ২৬ রানের জুটি বাংলাদেশ ইনিংসেই সর্বোচ্চ! স্লিপে ক্যাচ দিয়ে নাইম হয়েছেন রাবাদার তৃতীয় শিকার। টাইগারদের ইনিংসের শেষটা করেছেন কেশব মহারাজ। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে তাইজুল হয়েছেন বোল্ড। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৩টি করে উইকেট মুল্ডার, রাবাদা এবং মহারাজের। অন্য উইকেট পিটের দখলে।
COMMENTS