বিশেষ প্রতিনিধি
আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল, ২০২৪ সালে আবারও এক গুরুতর সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর দলটির যে বিপর্যয় নেমে এসেছিল, বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান সংকট তার পুনরাবৃত্তি। পরিস্থিতি ভিন্ন হলেও এবারের সংকট দলের জন্য চরম অস্থিতিশীলতা এবং নেতৃত্বহীনতা বয়ে এনেছে।
দলের প্রকাশ্যে কোনো নেতাকে দেখা না যাওয়ায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দলটি বর্তমানে সাংগঠনিকভাবে ভেঙে পড়েছে। কিছু বিবৃতি আসলেও দলীয় কার্যক্রম কোনোভাবেই দৃশ্যমান নয়। ভারতে আশ্রয় নেওয়া কিছু নেতার তথ্য পাওয়া গেলেও তাদের সঠিক অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
১৯৭৫ এবং ২০২৪ সাল দুই ঘটনাই আওয়ামী লীগের জন্য কঠিন সংকটের সময়। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর দল যেমন বিভক্ত হয়েছিল, তেমনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বের অভাবেও বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব সংকটে পড়েছে। তবে ইতিহাস প্রমাণ করেছে, এই দল পুনর্গঠিত হওয়ার ক্ষমতা রাখে। ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগ আবারও পুনর্গঠিত হবে কি না, তা সময়ই বলে দেবে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল, ২০২৪ সালে আবারও এক গুরুতর সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর দলটির যে বিপর্যয় নেমে এসেছিল, বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান সংকট তার পুনরাবৃত্তি। পরিস্থিতি ভিন্ন হলেও এবারের সংকট দলের জন্য চরম অস্থিতিশীলতা এবং নেতৃত্বহীনতা বয়ে এনেছে।
২০২৪ সালের অগাস্ট: বর্তমান সংকট
গত পাঁচই অগাস্ট, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর আওয়ামী লীগ অভ্যন্তরীণ সংকটে পড়েছে। ছাত্র আন্দোলনের তীব্রতা এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ভাঙচুর করা হয়েছে। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের অনেকেই আত্মগোপনে চলে গেছেন বা আটক হয়েছেন।দলের প্রকাশ্যে কোনো নেতাকে দেখা না যাওয়ায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দলটি বর্তমানে সাংগঠনিকভাবে ভেঙে পড়েছে। কিছু বিবৃতি আসলেও দলীয় কার্যক্রম কোনোভাবেই দৃশ্যমান নয়। ভারতে আশ্রয় নেওয়া কিছু নেতার তথ্য পাওয়া গেলেও তাদের সঠিক অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
১৯৭৫ সালের ১৫ই অগাস্টের পর পরিস্থিতি
১৯৭৫ সালের ১৫ই অগাস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর আওয়ামী লীগ প্রচণ্ড সংকটে পড়েছিল। দলটির ভেতরে বিভক্তি এবং নেতৃত্বের অভাব তখন স্পষ্ট হয়ে ওঠে। খন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বে যারা দলটির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন, তারা ক্ষমতায় এসেছিলেন। দলের অনেক নেতা আত্মগোপনে চলে যান বা কারাবন্দি হন। সেই সময় বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার প্রবাসে থাকার কারণে তারা বেঁচে যান, যা দলের জন্য পুনর্গঠনের সম্ভাবনা তৈরি করেছিল।১৯৭৫ ও ২০২৪: একই পরিণতি?
ইতিহাসবিদ এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ১৯৭৫ এবং ২০২৪ সালের ঘটনাগুলোর মধ্যে কিছু সাধারণ মিল রয়েছে। অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, "দুটি ঘটনাই দলকে ছন্নছাড়া করে দিয়েছে।" ১৯৭৫ সালে যেমন আওয়ামী লীগ অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক চাপের মধ্যে পড়ে, ২০২৪ সালেও একই ধরনের চাপ অনুভূত হচ্ছে।দলীয় নেতৃত্বের শূন্যতা
দলটির নেতৃত্বশূন্যতা বর্তমান সংকটের মূল কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে। ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা দলের হাল ধরলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে তাকে আর প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না। তার অনুপস্থিতিতে তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বিভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছেন, যা দলের ভেতর নেতৃত্বের শূন্যতা আরও প্রকট করে তুলেছে। বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, "দুই মাস হয়ে গেছে, কিন্তু এখনো কোনো নেতা নেতৃত্বে উঠে আসতে পারেননি।"১৯৭৫ এবং ২০২৪ সাল দুই ঘটনাই আওয়ামী লীগের জন্য কঠিন সংকটের সময়। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর দল যেমন বিভক্ত হয়েছিল, তেমনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বের অভাবেও বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব সংকটে পড়েছে। তবে ইতিহাস প্রমাণ করেছে, এই দল পুনর্গঠিত হওয়ার ক্ষমতা রাখে। ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগ আবারও পুনর্গঠিত হবে কি না, তা সময়ই বলে দেবে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
COMMENTS