
শাহীন রহমান
এনএনবি, পাবনা
কাঠমিস্ত্রির কাঠের কাজ, আধুনিক প্রযুক্তির লোহার ব্যবহার, উন্নতমানের ইট, মাটি, আর বাঁশের সমন্বয়ে একটি বিদ্যালয় গড়ে তোলা হয়েছে। যেখানে আবার মাটির ঘর বানিয়ে স্থাপন করা হয়েছে লাইব্রেরী। শুধু নির্মাণশৈলী-ই নয়, সেখানে হাসি, আনন্দ, নাচ, গান আর খেলার মাধ্যমে শিশুরা শিখছে পড়াশোনা।
এনএনবি, পাবনা
কাঠমিস্ত্রির কাঠের কাজ, আধুনিক প্রযুক্তির লোহার ব্যবহার, উন্নতমানের ইট, মাটি, আর বাঁশের সমন্বয়ে একটি বিদ্যালয় গড়ে তোলা হয়েছে। যেখানে আবার মাটির ঘর বানিয়ে স্থাপন করা হয়েছে লাইব্রেরী। শুধু নির্মাণশৈলী-ই নয়, সেখানে হাসি, আনন্দ, নাচ, গান আর খেলার মাধ্যমে শিশুরা শিখছে পড়াশোনা।
বড়াল নদের পাড়ে হওয়ায় স্কুলটির নাম বড়াল বিদ্যা নিকেতন। পরিবেশবান্ধব ও গ্রামীণ পরিবেশে শিশুদের পাঠদানের লক্ষ্যে পাবনার চাটমোহর উপজেলার কুমারগাড়া গ্রামে এ বিদ্যালয়টি চালু করা হয়েছে। এর ব্যতিক্রমী নির্মাণশৈলী এবং পাঠদানের অভিনবত্ব ইতিমধ্যেই সবার নজর কেড়েছে।

দোতলা স্কুলটির নিচতলায় খোলা বারান্দায় বাঁশের চাঁটাইয়ে টাঙানো রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষামূলক চিত্রকর্ম। কোমলমতি শিশুরা সেখানে বসে মনের আনন্দে পড়ছে। পাশেই একটি মাটির ঘরে একটি পাঠাগার স্থাপন করা হয়েছে। যাতে শিশুরা সেখানে গিয়ে ইচ্ছেমতো বই পড়তে পারে। কম্পিউটার শেখার জন্য দ্বিতীয় তলায় আলাদা শেণীকক্ষ রয়েছে।
গাছের ছায়ায় ঘেরা স্কুলটিতে শিক্ষার্থীদের জন্য চালু রয়েছে মিড ডে মিল। যেখানে শিশুরা শিখছে স্বাস্থ্য সচেতনতা ও শৃঙ্খলা। সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে লাইন ধরে নিজেরাই খাবার নিচ্ছে। একসঙ্গে বসে খাওয়া শেষে ময়লা ফেলছে বাঁশ দিয়ে তৈরী ঝুরিতে। শ্রেণীকক্ষের জানালা নেই, কিন্তু আলো আছে। যাতে শিশুরা সহজেই গাছ, পাখি, বৃষ্টি, প্রকৃতি দেখতে পারে। ছুঁয়ে দেখতে পারে বৃষ্টি।
গাছের ছায়ায় ঘেরা স্কুলটিতে শিক্ষার্থীদের জন্য চালু রয়েছে মিড ডে মিল। যেখানে শিশুরা শিখছে স্বাস্থ্য সচেতনতা ও শৃঙ্খলা। সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে লাইন ধরে নিজেরাই খাবার নিচ্ছে। একসঙ্গে বসে খাওয়া শেষে ময়লা ফেলছে বাঁশ দিয়ে তৈরী ঝুরিতে। শ্রেণীকক্ষের জানালা নেই, কিন্তু আলো আছে। যাতে শিশুরা সহজেই গাছ, পাখি, বৃষ্টি, প্রকৃতি দেখতে পারে। ছুঁয়ে দেখতে পারে বৃষ্টি।

প্রাকৃতিক পরিবেশে, মাটির গন্ধ নিয়ে, পরিবেশ সচতেনতায়, হাসি, আনন্দে পাঠ নিচ্ছে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা। তারা যাতে হাপিয়ে না ওঠে সেজন্য এমন ব্যতিক্রমী আয়োজনে পাঠদানের ব্যবস্থা করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। শান্তি নিকেতনের আদলে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে স্কুলটি। সপ্তাহে একদিন রয়েছে সাংস্কৃতিক চর্চা। এতে শিশুরা গড়ে উঠছে মানবিক মুল্যবোধ সম্পন্ন ও সংস্কৃতিমনা মানুষ হিসেবে।
চাটমোহর উপজেলার কুমারগাড়া গ্রামে ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত বড়াল বিদ্যা নিকেতনের নবযাত্রা উদ্বোধন করা হয় শনিবার (০২ মার্চ)। মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে বিদ্যালয়টির উদ্বোধন করেন ঢাকার আর্কিটেক্ট ফার্ম ‘ভিত্তি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্থপতি ইসতিয়াক জহির। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, স্থপতি ইকবাল হাবিব।
চাটমোহর উপজেলার কুমারগাড়া গ্রামে ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত বড়াল বিদ্যা নিকেতনের নবযাত্রা উদ্বোধন করা হয় শনিবার (০২ মার্চ)। মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে বিদ্যালয়টির উদ্বোধন করেন ঢাকার আর্কিটেক্ট ফার্ম ‘ভিত্তি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্থপতি ইসতিয়াক জহির। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, স্থপতি ইকবাল হাবিব।

চিত্রশিল্পী মিলন রবের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন, চাটমোহর পৌরসভার সাবেক মেয়র মির্জা রেজাউল করিম দুলাল, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মগরেব আলী, বড়াল বিদ্যা নিকেতনের পরিচালক এসএম মিজানুর রহমান। ছিল শিশু শিক্ষার্থীদের কুচকাওয়াজ ও মনোজ্ঞ ডিসপ্লে প্রদর্শণ। উপস্থিত ছিলেন অভিভাবক, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও গণমাধ্যমকর্মীরা।
স্কুলটির পরিকল্পনা নিয়ে স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, ’গতানুগতিক ধারার বাইরে ব্যতিক্রমী কিন্তু পরিবেশ বান্ধব ও প্রাকৃতিক খোলামেলা পরিবেশের চিন্তা থেকে স্কুলটি করা। যেখানে জানালা নেই, কিন্তু আলো আছে। বৃষ্টি পড়ছে, কিন্তু ক্লাসের শিক্ষার্থীদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। তারা হাত দিয়ে বৃষ্টিকে ছুঁতে পারছে। আবদ্ধতার বিরুদ্ধে উন্মুক্ততার অভিনব উদ্যোগ এটি। বাংলার মাটি, বাংলার উঠোন, প্রকৃতি, পরিবেশ, আমরা সেই রুপটাকে ধারণ করার চেষ্টা করেছি।’
স্কুলটির পরিকল্পনা নিয়ে স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, ’গতানুগতিক ধারার বাইরে ব্যতিক্রমী কিন্তু পরিবেশ বান্ধব ও প্রাকৃতিক খোলামেলা পরিবেশের চিন্তা থেকে স্কুলটি করা। যেখানে জানালা নেই, কিন্তু আলো আছে। বৃষ্টি পড়ছে, কিন্তু ক্লাসের শিক্ষার্থীদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। তারা হাত দিয়ে বৃষ্টিকে ছুঁতে পারছে। আবদ্ধতার বিরুদ্ধে উন্মুক্ততার অভিনব উদ্যোগ এটি। বাংলার মাটি, বাংলার উঠোন, প্রকৃতি, পরিবেশ, আমরা সেই রুপটাকে ধারণ করার চেষ্টা করেছি।’

ইকবাল হাবিব আরও বলেন, ’বিদ্যালয় চত্বরের সামনে গাছগুলোকে একিভূত করে শান্তি নিকেতনীয় কায়দায় বিদ্যালয় করার চেষ্টাকে ধারণ করেছি। যেখানে শিশুরা আকাশকে আর দুই পাশের প্রকৃতিকে তার গন্ডি মনে করবে। সবকিছুর সাথে প্রযুক্তি নির্ভরতার কম্পিউটার আর রোবোটিক্স শেখার সুযোগ পাবে শিশুরা। খেলতে খেলতে, গান গাইতে গাইতে, ছবি আঁকতে আঁকতে, হাতটা দুই পাশে ছড়িয়ে ঘুড়ির মতো উড়তে উড়তে এরা শিখবে, বড় হবে এবং দেশকে এগিয়ে যাবে।’
ভিত্তির ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্থপতি ইসতিয়াক জহির বলেন, ’পাশ্চাত্য ধ্যান-ধারণা বর্জন করে বাংলাদেশ শিখতে হলে বীজতলা থেকেই শুরু করতে হবে। এমন একটি জায়গায় পরিবেশকে ঘিরে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা, কিন্তু বাঙালিয়ানা ধরে রেখে যে স্থাপনা নি:সন্দেহে প্রশংসনীয়। ভবিষ্যতের আধুনিক ও স্মার্ট বাংলাদেশকে এখান থেকেই খুঁজতে হবে। চলনবিলে একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে এমন একটি স্কুল অনেকেই আশা করি না। কিন্তু এখন সেটি হচ্ছে। আমি মনে করি এই স্কুল বাংলাদেশের জন্য মাইলফলক।’
ভিত্তির ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্থপতি ইসতিয়াক জহির বলেন, ’পাশ্চাত্য ধ্যান-ধারণা বর্জন করে বাংলাদেশ শিখতে হলে বীজতলা থেকেই শুরু করতে হবে। এমন একটি জায়গায় পরিবেশকে ঘিরে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা, কিন্তু বাঙালিয়ানা ধরে রেখে যে স্থাপনা নি:সন্দেহে প্রশংসনীয়। ভবিষ্যতের আধুনিক ও স্মার্ট বাংলাদেশকে এখান থেকেই খুঁজতে হবে। চলনবিলে একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে এমন একটি স্কুল অনেকেই আশা করি না। কিন্তু এখন সেটি হচ্ছে। আমি মনে করি এই স্কুল বাংলাদেশের জন্য মাইলফলক।’

চিত্রশিল্পী মিলন রব বলেন, ’তথাকথিত শিক্ষা ব্যবস্থার বাইরে গিয়ে একদম ভিন্নধর্মী বাঙালী সংস্কৃতির বিকাশ হতে পারে এবং সেটি প্রাকৃতিক ও পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতিতে তাদের সেই ভাবনাটা প্রশংসনীয়। আমরা চিত্রকলা বা শিল্পকলার ভাবনাগুলো নিয়ে ভাবছি বাচ্চাদের নিয়ে। সেটি পরিবেশ ও শিক্ষার সাথে আলোকে নিয়ে ভাবছি। দেশ গড়ার কাজটি নিয়ে ভাবছি। সেই ভাবনায় বড়াল বিদ্যা নিকেতন বাংলাদেশের জন্য একটি প্রতিক।’
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির বলেন, ’আমরা জানি শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। সেই মেরুদন্ড যদি শক্ত না হয়, ভাল না হয়, তাহলে তো সেখান থেকে ভাল কিছু আশা করা যায় না। আমরা মনে করি স্থপতি ইকবাল হাবিবের যে চিন্তা, বাংলাদেশ মানবিক কারিগর করার একটি ক্ষেত্র।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির বলেন, ’আমরা জানি শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। সেই মেরুদন্ড যদি শক্ত না হয়, ভাল না হয়, তাহলে তো সেখান থেকে ভাল কিছু আশা করা যায় না। আমরা মনে করি স্থপতি ইকবাল হাবিবের যে চিন্তা, বাংলাদেশ মানবিক কারিগর করার একটি ক্ষেত্র।

বড়াল বিদ্যা নিকেতনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক এস এম মিজানুর রহমান বলেন, ’পরিবেশ বান্ধব ও মানবিক মানুষ তৈরীর জন্য স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা। তখন আমাদের সামর্থ ছিল না। পরবর্তীতে স্থপতি ইকবাল হাবিব তার হাতটা আমাদের দিকে বাড়িয়ে দিলেন। তিনি নিজেই এই ব্যতিক্রমী স্কুল ভবনের ডিজাইন করেছেন এবং অর্থ দিয়েও সহযোগিতা করেছেন। আমাদের যে স্বপ্ন ছিল তার সহায়তায় সেটি আজ বাস্তবায়ন হলো।’
COMMENTS