$type=ticker$c=12$cls=0$b=0

শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের অগ্রদূত

হীরেন পণ্ডিত

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আসলে কী! আজকাল আমরা সবাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা সবসময় শুনতে পাই। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে আসলে কি বোঝায়? অনেকে অনেক কথা বলেন, নিজেদেরই এ ব্যাপারে সঠিক ধারণা নেই বলেই মনে হয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ব্যাপ্তি অনেক বিশাল, প্রথমে দেশপ্রেম দেশকে সত্যিকারের ভালোবাসা। দেশের কল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ এবং প্রগতিশীল একটি জাতিই হবে সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ একটা জাতি এবং একটি দেশ যা ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে মুক্তিযুদ্ধের শপথে সামনে এগিয়ে যাবে। এ দেশের আকাশ-বাতাস-সবুজকে যারা ভালোবাসে, এ দেশের মানুষকে যারা ভালোবাসে, এ দেশের উন্নয়নে যারা সুখী হয় তারাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক ও বাহক। তারাই ভালোবেসে লাল-সবুজের পতাকাটা হৃদয়ে ধারণ করেন, পতাকাকে উর্ধ্বে তুলে ধরেন। তারাই যে কোন শোষণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। এসবই হল একজন বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নিয়ামক। সর্বোপরি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানে অসাম্প্রদায়িক এক প্রগতিশীল বাংলাদেশ।

বঙ্গবন্ধু আমাদের মুক্তি চেয়েছিলেন। তিনি সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের কালো রাতে জাতির জনককে হত্যার পর তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলায় শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে এক জঘন্য লুকোচুরি। এ দেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস কেবল তাই নয়, স্বাধীনতার সপক্ষশক্তির কাছে ২৬ মার্চ, ১৬ ডিসেম্বরের মতো ৭ মার্চও সমান তাৎপর্যপূর্ণ।

আমাদের মনে রাখতে হবে, স্বাধীনতার বীজ বপন করা হয়েছিল সেই ১৯৫২ সালে। আর মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা এসেছিল ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে। সুতরাং স্বাধীনতার ইতিহাসে কালিমা লেপন করতে চায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান যত অস্পষ্ট হোক না কেন, তা সময় ও মানুষের কাছে এক সময় উন্মোচিত হয়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষশক্তির আদর্শে কুঠারাঘাত এবং রাজনীতির ময়দান থেকে আখের গোছানোর উদ্দেশ্যেই তারা কখনও কখনও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে প্রতারণা করে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের অনুসারীদের এ দেশের স্বার্থে, রাজনৈতিক আদর্শের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে, উন্নয়নের স্বার্থে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। সুতরাং সতর্কতাই হতে পারে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষশক্তির একমাত্র রক্ষাকবচ।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অর্থ যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদিগকে প্রাণোৎসর্গ করতে উদ্ধুদ্ধ করেছিলো তা হলো জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্ম নিরপেক্ষতার সেই সকল আদর্শ।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশের গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশ যেভাবে বার বার বাধাগ্রস্ত হয়েছে তারই-বা উত্তরণ ঘটতো কি? এমন অজস্র প্রশ্নের উত্তর একটাই- শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসার কারণেই আজ গণতন্ত্রের মুক্তি মিলেছে, উন্নয়ন আর অগ্রযাত্রার পথে বিশ্বে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা সবচেয়ে দুঃসময়ে দলের ঐক্যের প্রতীক হিসাবে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি গণতন্ত্রের সংগ্রামে সর্বদা লড়াই করেছেন। তিনি বারবার মৃত্যুর দ্বার থেকে ফিরে এসেছেন। তিনি ১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর আওয়ামী লীগকে একটি জনপ্রিয় দল হিসাবে ক্ষমতায় এনেছেন এবং বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার জন্য করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ১৯৯৬ সালে তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসে। প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন শেখ হাসিনা। এরপর ২০০৮ সালে দ্বিতীয়, ২০১৪ সালে তৃতীয় ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন তিনি। 

১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা সরকার গঠন করে যে অসম্ভব কাজটি সম্ভব করেছিলেন তা হল বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার এবং পরে ২০১০ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা। আর সেই সুযোগ এসেছিল বাঙালি জাতির আদর্শকে এগিয়ে নিয়ে যাবার। স্বাধীনতাবিরোধী দেশি-বিদেশি চক্রের হাতে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাÐের পর কালো অন্ধকার গ্রাস করেছিল, সেই অন্ধকার তাড়াতে প্রথমে আলোর মশাল জ¦ালিয়েছিলেন তিনি। সেই মশাল, প্রাথমিক সংকট- সীমাবদ্ধতার পর দিকে দিকে আলোকিত করতে থাকে, শুরু হয় রাহু মুক্তির পালা। সব আবর্জনা দূর করতে প্রভাতে যেমন বাঙালি একাকার হয়, প্রতিশ্রæতিতে সমৃদ্ধ হয়, তেমনি এক শুভ প্রতিশ্রæতির বাতাস বইতে দেখা যায় তাঁর দেশে ফেরার দিন থেকে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবারের সদস্যের নির্মম হত্যাকাÐের পর ঘাতকদের ষড়যন্ত্র আর নিরাপত্তার অভাবে পরিবারের সবাইকে হারানোর পরও দীর্ঘ ৬ বছর দেশে ফিরতে পারেননি শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। নানা প্রতিকূলতার মাঝেই দেশব্যাপী ছড়িয়ে থাকা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এক সময় চাঙা হয়ে ওঠেন; নতুন করে দেশ গড়ার প্রত্যয়ে বলীয়ান হয়ে ওঠেন। তখন শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতেই নেতা-কর্মীরা কাউন্সিলের মাধ্যমে তাকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করেন। ১৯৮১ সালের ১৭ মে তিনি ফিরে আসেন। ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর দেশকে পাকিস্তানী ভাবধারা থেকে বাংলাদেশকে পুনরায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরিয়ে আনা এবং পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের অভিযাত্রায় মনোনিবেশ করেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, সাম্যতা, ন্যায় বিচার, উন্নয়নও অগ্রগতির উপর ভিত্তি করে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা একটি কঠিন বিষয় ছিলো।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতির পিতা বা রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা বা স্বাধীনতাসংগ্রামের নেতা হিসেবে  দেশে মর্যাদার আসনে চিরকাল অধিষ্ঠিত আছেন। বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসের গৌরবজনক ঘটনা বা অধ্যায় হচ্ছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। ৩০ লাখ শহীদের বুকের তাজা রক্ত, লাখ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি এবং সীমাহীন আত্মত্যাগের বিনিময়ে একাত্তরের ৯ মাস যুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত হয়। ২৩ বছরের আন্দোলন-সংগ্রাম এবং ৯ মাসের সশস্ত্র যুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করেই বিজয় ছিনিয়ে আনা হয়েছে ১৬ ডিসেম্বর। বাংলার স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করেছেন বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, ইতিহাসের মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির কাছে সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল ঘটনা এবং যত দিন বাঙালি জাতি থাকবে, তত দিন এই মুক্তিযুদ্ধই থাকবে শ্রেষ্ঠ গৌরবের অধ্যায় হিসেবে, অবিস্মরণীয় এক গৌরবগাথা হিসেবে। কারণ বাঙালি জাতি দীর্ঘকাল কোনো না কোনো শাসক দ্বারা শোষিত হয়েছে, অনেক কিছু বিসর্জন দিতে হয়েছে। কখনো মোগল-পাঠান, কখনো ব্রিটিশ, কখনো পাকিস্তানিদের দ্বারা জাঁতাকলে পিষ্ট হতে হয়েছে। বাঙালির ইতিহাস মানেই শোষণ আর অধিকার থেকে বঞ্চনার ইতিহাস। বাঙালির ইতিহাস মানে না পাওয়া আর বেদনার ইতিহাস। আজকের নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার জন্য দরকার মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তাদের সামনে উপস্থাপন করা, তুলে ধরা। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে লিখিত বই, মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত বিভিন্ন ছবি, নাটক এগুলো আরো বেশি করে প্রচার করা দরকার। আজকের প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা দরকার যে মুক্তির জন্য বাঙালি জাতিকে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে। 

মুক্তিযোদ্ধারা যে জীবনকে তুচ্ছ করে, নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে দেশমাতা ও মাতৃভূমিকে মুক্ত করে, স্বাধীন বাংলাদেশের বিজয়ের পতাকা ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছিলেন, তা নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অর্জন তাদের সামনে তুলে ধরতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় একটি জাতিকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করার জন্য যত ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। ফলে তারা শ্রমজীবী, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিকসহ এ দেশের সূর্যসন্তানদের হত্যা করেছিল। বাঙালি জাতি কিভাবে তাদের পরাজিত করেছিল, তার যথাযথ ইতিহাস নতুন প্রজন্ম, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার দায়িত্ব ও কর্তব্য সবারই। কিন্তু আমরা সেটি কতটুকু করছি, সেই প্রশ্ন আমাদের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ হলো বাঙালি জাতির শোষণের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হওয়ার যুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হলো আমাদের বাঙালি জাতির আজন্মলালিত স্বপ্ন, একটি জাতির চেতনার স্বপ্ন। এই স্বপ্ন দোলা দিয়েছে আমাদের মনে, আমাদের স্বপ্নকে অনুপ্রাণিত করেছে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে। সহায়তা করেছে স্বপ্ন বাস্তবায়নে এবং এই স্বপ্নকে বেগবান করেছে এবং এক নতুন আশা ত্বরান্বিত করেছে। যে চেতনা বাঙালি জাতিকে একতাবদ্ধ করেছিল একটি গণতান্ত্রিক ও শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায়। এই চেতনা নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে আমাদের আরো কাজ করতে হবে। নতুন প্রজন্মের চেতনাকে আরো শাণিত করতে হবে।

যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি, কিন্তু শুনেছে গল্পের আকারে তাদের পরিবারের কোনো বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তির কাছে, শিক্ষকের কাছে, কোনো নেতার কাছে, কোনো মুক্তিযোদ্ধার কাছে বা বইতে পড়েছে। সেই শোনা বা পড়া কতটুকু সঠিক বা তার বিস্তৃৃতি কতটুকু, তা আমরা জানি না। একটি উদ্যোগ নিতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরার জন্য আমরা কতটুকু সফল? ইতিহাস বিকৃতি জাতিকে ধ্বংস আর বিভ্রান্তি ছাড়া কিছুই দিতে পারে না। 

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে সে বিষয়টি নতুন প্রজন্ম, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা। যা নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করবে। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসই হবে নতুন প্রজন্মের অনুপ্রেরণার উৎস, এই চেতনাকে শাণিত করতে আমাদের এখনই কাজ শুরু করা উচিত। 

বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জনগণের সার্বিক কল্যাণ, বিকাশ, এবং মুক্তির লক্ষ্যে অগ্রণী হিসাবে কাজ শুরু করেন। তিনি প্রমাণ করেছেন যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিকাশের জন্য তার বিকল্প  নেই। শেখ হাসিনার সততা, নিষ্ঠা, যুক্তিবাদী মানসিকতা, দৃঢ় মনোবল, প্রজ্ঞা এবং অসাধারণ নেতৃত্ব বাংলাদেশকে বিশ্ব অঙ্গনে এক ভিন্ন উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং তিনি বিশ্ববিখ্যাত নেতা হিসাবে পরিচিত। আওয়ামী লীগ সর্বদা সকল প্রকার শোষণ, বঞ্চনা, অবিচার, নিপীড়নের বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে সোচ্চার, রক্ষণাত্মক ভূমিকা পালন করেছে এবং অব্যাহত রেখেছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে জনগণের অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক মুক্তির জন্য কাজ করে। এই দলটি ক্ষমতায় থাকলে জনগণের ভাগ্য উন্নতি হয়। এই দলের ভিত্তি থেকে ৭৪ বছরের ইতিহাস সেই সত্যের সাক্ষ্য দেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাঙালি জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠা, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির লালন, শোষণমুক্ত সমাজ বিনির্মাণ এবং একটি উন্নত সমৃদ্ধ আধুনিক, প্রগতিশীল রাষ্ট্রব্যবস্থা বিনির্মাণের লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন।


শেখ হাসিনার স্বপ্ন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, দেশের মানুষকে উন্নয়নের স্বাদ পাইয়ে দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করছেন। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রচনা, বঙ্গবন্ধুর অস্তিত্বকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্থান দিয়ে যথাযথ মর্যাদার আসনে বসানোই ছিল মূল লক্ষ্য। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের অঙ্গীকার ছিলো দেশবাসীর অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষা ইত্যাদি মৌলিক অধিকার পূরণ করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশি-বিদেশি নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে উন্নয়ন, অগ্রগতি আর সমৃদ্ধির পথে হাঁটছেন। ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত একটি প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য চারটি ভিত্তি সফলভাবে বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। এগুলো হলো-স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি। এর পাশাপাশি হাতে নেওয়া হয়েছে ২১০০ সালের বদ্বীপ কেমন হবে- সেই পরিকল্পনা। স্মার্ট বাংলাদেশে সব কাজ, সম্পাদন করা হবে প্রযুক্তির মাধ্যমে। যেখানে প্রত্যেক নাগরিক প্রযুক্তি ব্যবহারে হবে দক্ষ। ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ হবে সাশ্রয়ী, টেকসই, বুদ্ধিভিত্তিক, জ্ঞানভিত্তিক এবং উদ্ভাবনী বাংলাদেশ। 

শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গত ১৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশকে যেভাবে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন ও বাংলাদেশ বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটেও অন্য দেশগুলোর মতো বড় ধরনের কোনো অর্থনৈতিক সংকটে না পড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে তিনি এই সময়ে দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তিকে শক্ত অবস্থানে নিতে পেরেছেন। তা না হলে ১৭ কোটি মানুষের দেশটাকে এই সংকটকালেও বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করা বেশ কঠিন হতো।

আওয়ামী লীগ মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান কখনো ভুলবে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শে দেশকে গড়ে তুলছে। এদেশের জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের যে অবদান তা কখনই আমরা ভুলি না। তাই আমরা বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শে গড়ে  তোলার উদ্যোগ নিয়েছি। সরকার অবহেলিত মুক্তিযোদ্ধাদের সন্ধান করছেন এবং তাদের সুবিধাগুলো যেমন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা নিশ্চিত করতে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। 

মুক্তিযোদ্ধারা একেবারে অবহেলিত হয়ে পড়েছিল সরকার তাদের খুঁজে বের করে সব ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে। তাঁদের ভাতার ব্যবস্থা করা, মারা গেলে রাষ্ট্রীয় সম্মানের ব্যবস্থা এমনকি তাঁদের দাফনের ব্যবস্থাও সরকার করছে। যাঁরা আমার বাবার ডাকে অস্ত্র তুলে নিয়ে এদেশ স্বাধীন করেছেন তাদের সম্মান করা, মর্যাদা দেওয়াই আমাদের কাজ। সরকার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষায় কাজ করছে। তরুণ প্রজন্ম যদি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি দেখে বিজয়ের ইতিহাস জানতে পারে, তাহলে তারা অনুপ্রাণিত হবে এবং জানবে কীভাবে দেশের জন্য কাজ করতে হয়। শেখ হাসিনা বলেন, এ লক্ষ্যে সরকার প্রতিটি উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করছে এবং ঐতিহাসিক সোহ্‌রাওয়ার্দী উদ্যান যেখানে জাতির পিতা ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ দিয়েছিলেন, স্বাধীনতা ও পাকিস্তানি দখলদারিত্বের পর দেশ পরিচালনার নির্দেশনা দিয়েছিলেন, পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে সেটি সংরক্ষণের ব্যবস্থাও নিয়েছে। কেউ কখনও মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করবে না। ভবিষ্যতে কেউ মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পরিবারকে অবহেলার চোখে দেখবে না। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, তাঁর সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বৃদ্ধি করেছে এবং এটি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে অব্যাহত থাকবে। 

হীরেন পণ্ডিত: প্রাবন্ধিক ও রিসার্চ ফেলো।

COMMENTS

ফেসবুকে ফলো করুন...


Developed by Julius Choudhury
নাম

অপরাধ,81,অর্থনীতি,130,আইন ও আদালত,25,আন্তর্জাতিক,53,আবহাওয়া,25,আশুলিয়া,1,এভিয়েশন,3,কক্সবাজার,5,কলকাতা,2,কিশোরগঞ্জ,17,কুড়িগ্রাম,15,কুমিল্লা,5,কুষ্টিয়া,8,কূটনীতি,3,কৃষি,14,ক্যাম্পাস,15,খাগড়াছড়ি,1,খুলনা,1,খেলা,74,গণমাধ্যম,179,গাইবান্ধা,2,গাজীপুর,192,গোপালগঞ্জ,5,চট্টগ্রাম,15,চাঁদপুর,1,চাকরি,5,জয়পুরহাট,2,জাতীয়,3,জাপান,1,জামালপুর,5,টাঙ্গাইল,7,ঠাকুরগাঁও,1,ঢাকা,1,ঢাবি,1,দিনাজপুর,17,ধর্ম,17,নড়াইল,3,নবাবগঞ্জ,1,নরসিংদী,12,নাটোর,2,নীলফামারী,1,নেত্রকোণা,8,নেপাল,1,নোয়াখালী,2,পরিবেশ,11,পাকিস্তান,2,পাবনা,129,প্রবাস,4,প্রযুক্তি,51,ফটো,1,ফিলিপাইন,1,ফেনী,3,বগুড়া,1,বরিশাল,3,বাং,1,বাগেরহাট,2,বান্দরবান,9,বিচিত্র,2,বিনোদন,22,বিশেষ প্রতিবেদন,16,বিশ্ব,263,বেনাপোল,1,ব্যাংক,1,ব্রাহ্মণবাড়িয়া,12,ভারত,5,ভুটান,1,ভ্রমণ,9,মতামত,14,ময়মনসিংহ,13,মানিকগঞ্জ,1,মিয়ানমার,1,মুন্সীগঞ্জ,1,মেহেরপুর,13,যশোর,1,যুক্তরাষ্ট্র,2,যোগাযোগ,3,রংপুর,273,রাঙ্গামাটি,1,রাজধানী,69,রাজনীতি,189,রাজশাহী,2,রাশিয়া,2,লক্ষ্মীপুর,3,লালমনিরহাট,4,শরীয়তপুর,2,শিক্ষা,97,শিল্প ও সংস্কৃতি,2,শেরপুর,1,সংস্কৃতি,7,সাতক্ষীরা,2,সাভার,3,সারাদেশ,592,সাহিত্য,7,সিলেট,6,সুনামগঞ্জ,1,স্বাস্থ্য,56,
ltr
item
NNB - News Network of Bangladesh: শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের অগ্রদূত
শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের অগ্রদূত
শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের অগ্রদূত
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgIUFue7YOXkecrXAlkyWmYj5HBDADDHBMLUIuLfmgBqoMMh021LF-Wq9ylT67Tx2bA9vsgfhrFWNJ08xe9zndR4JbdzHrOE13BXHfSw_cDu1BoC_xqB3QfYCJwbPLkY6WRyQQaCf0BB73VTciTHqsYZvC3zyIHKeFHzYPcsRDY8wCRJwKi8NsvUZOJ/s320/pmo.jpg
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgIUFue7YOXkecrXAlkyWmYj5HBDADDHBMLUIuLfmgBqoMMh021LF-Wq9ylT67Tx2bA9vsgfhrFWNJ08xe9zndR4JbdzHrOE13BXHfSw_cDu1BoC_xqB3QfYCJwbPLkY6WRyQQaCf0BB73VTciTHqsYZvC3zyIHKeFHzYPcsRDY8wCRJwKi8NsvUZOJ/s72-c/pmo.jpg
NNB - News Network of Bangladesh
https://edition.nnb.com.bd/2023/06/010523060703.html
https://edition.nnb.com.bd/
https://edition.nnb.com.bd/
https://edition.nnb.com.bd/2023/06/010523060703.html
true
8430089477468953663
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts সব দেখনু Read More Reply Cancel reply Delete By হোম PAGES POSTS সব দেখনু সম্পর্কিত বিষয় ARCHIVE খোঁজ ALL POSTS Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy Table of Content