রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের পক্ষে সাটানো সকল ধরনের প্রচার-প্রচারণা সামগ্রী আগামী ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা। প্রার্থী নিজ দায়িত্বে প্রচার সামগ্রী অপসারণ না করলে আচরণ বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে সকল প্রকার মিছিল-মিটিং ও শোডাউনের উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এই নির্দেশনা দেন রংপুর সিটি রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মোঃ আবদুল বাতেন। এ সময় রংপুর জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেনসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্পন্ন করতে যা যা করণীয়, তাই করা হবে জানিয়ে আবদুল বাতেন বলেন, একটি গ্রহণযোগ্য আইনানুগ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আচরণ বিধি প্রতিপালনের কোনো বিকল্প নেই। আচরণ বিধি অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থী কিংবা প্রার্থীর পক্ষে লাগানো সকল ধরনের ব্যানার, পোস্টার ফেস্টুন, বিলবোর্ডসহ প্রচার-প্রচারণা সামগ্রী অপসারণ করতে হবে। কিন্তু গত ৭ নভেম্বর তফসিল ঘোষণা হলেও এখনো নগরজুড়ে বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টারে ছেয়ে আছে। আগামী ৩৬ ঘন্টার মধ্যে কোন প্রার্থী যদি নিজ দায়িত্বে এসব সামগ্রী অপসারণ না করে তাহলে প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার পরেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে নির্বাচন কমিশন।রিটার্নিং কর্মকর্তা আরও জানান, ইভিএমে ভোট প্রদান নিশ্চিত করতে মাঠ পর্যায়ে মগভেটিং কার্যক্রম চলবে। এজন্য খুব দ্রুত দায়িত্ব পাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণের কার্যক্রম শুরু হবে। সকল কেন্দ্রে ইভিএম এবং গোপন কক্ষ ছাড়াও সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।গাইবান্ধার মত সিসিটিভি ক্যামেরার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলে সিসিটিভি ক্যামেরা চালু রাখতে কি ধরনের উদ্যোগ নেয়া হবে, এমন প্রশ্নের উত্তরে রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন বলছেন, এগুলো নির্বাচন কমিশনের নলেজে আছে। কেউ যেন কোনো ভাবেই নির্বাচন কমিশনারের উদ্যোগে বাধা তৈরি করতে না পারে, সে ব্যাপারে কমিশন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সিসিটিভি ক্যামেরা নির্বাচন কমিশন থেকেও মনিটরিং করা হবে। কোথাও কোন ধরনের অনিয়ম হলে ভোট কেন্দ্র বন্ধসহ পুরো নির্বাচন বন্ধের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিবে নির্বাচন কমিশন।আগামী ২৭ ডিসেম্বর ২০১টি ভোট কেন্দ্রের ১৩৭টি কক্ষে সকাল সাড়ে আটটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ২৯ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। ৮ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ এবং ৯ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে জাতীয় পার্টির একক প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এটিএম গোলাম মোস্তফা বাবু, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালালেও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি। তাদের হাফ ডজন প্রার্থী মনোনয়নের জন্য মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।এছাড়াও একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তৃতীয় বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। আয়তনে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই সিটির ৩৩টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে লড়তে আড়াই শতাধিক প্রার্থী মাঠে নির্বাচনী বিভিন্নভাবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
COMMENTS