রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় জেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত হয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বোধদয় হয়েছে, ইভিএম মানেই ১০০% ভুয়া।
উল্লেখ্য গত ১৭ ই অক্টোবর রংপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে পীরগঞ্জ উপজেলার ৮ নম্বর আসনে সদস্য পদে প্রতিদ্ধন্ধী প্রার্থী ছিলেন পীরগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি এ জেড এম সেকেন্দার আলী মন্ডল। ঐ নির্বাচনে তিনি ”বৈদ্যুতিক পাখা” প্রতিক নিয়ে অংশগ্রহন করে ৫ ভোট পান। তাঁর প্রতিদ্বন্ধী ছিলেন ৬ জন। এই আসনে ৮৩ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মিজানুর রহমান তালা-চাবি প্রতিক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। ৭৩ ভোট পেয়ে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী ছিলেন হাতি প্রতিক নিয়ে উপজেলার মিঠিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোরশেদ আলী সরকার। নির্বাচনে উপজেলার ২১১ জন ভোটারের মধ্যে ২০৮ জন ভোট দিয়েছেন।
ঐ নির্বাচনে তিনি বড় ব্যাবধানে পরাজয়ের পর ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে বোমা ফাটানো নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন। পরাজিত এই প্রার্থী তাঁর ফেসবুকে মন্তব্য ছুঁড়ে অভিযোগ করেছেন- ইভিএমের মাধ্যমে ”যাকে ইচ্ছা তাঁকেই জেতানো সম্ভব”। জেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত হয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের এই নেতা ১৭ ই অক্টোবর সোমবার বিকেল সাড়ে ৪ টায় ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষনার পর থেকেই বিক্ষুদ্ধ হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তিনি এসব মন্তব্য করেন। ভোটের ফলাফল ঘোষনায় বিলম্বের কারনে ক্ষোভ প্রকাশ করে ব্যাক্তিগত আইডিতে এক ষ্টাটাসে পীরগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি এ জেড এম সেকেন্দার আলী মন্ডল লিখেছেন, ”ইভিএম মানেই ১০০% ভুয়া”। প্রতিদ্ধন্ধিতায় হারজিত থাকবেই। আমি মেনে নিলাম। কিন্তু আমাকে যে লোকগুলো ভোট দিল, সেই ভোট গুলো কোথায় গেল ? পারবেন এর জবাব দিতে ? এর আগে তাঁর এক ষ্টাটাসে তিনি লিখেছেন, ”পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড় চোরটার নাম ইভিএম”। এ ভাবে স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি এ জেড এম সেকেন্দার আলী মন্ডল নিজের ফেসবুক পেইজে এক একে ৬ টি ষ্টাটাসে লিখেছেন। সেখানে তিনি নিজের পরাজয়ের জন্য ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহন সহ কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে দায়ী করেছেন। তিনি আরও অভিযোগ করে লিখেছেন, ফলাফল ঘোষনার সময় তাঁকে থাকতে দেয়া হয়নি। আমি বার বার নির্বাচন কর্তৃপক্ষকে বলেছি, ভোট গণনানার সময় আমরা প্রার্থীরা থাকবো। কিন্তু আমাদেরকে থাকতে দেওয়া হলোনা কেন ? পীরগঞ্জে ইভিএমে ভোট গ্রহন শেষে প্রিন্ট আউট করার সময় এজেন্টদের আড়াল করে হাতে লেখা কাগজ তাদের হাতে দেয়া হয়েছে। প্রিন্ট কপি দেয়া হয়নি। দলের প্রতি আবেগঘন ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি লিখেছেন, এখন আওয়ামীলীগ করা খুব কঠিন। মনে হয় আওয়ামীলীগ আর করবো না। জীবন বাজি রেখে দল করেছি, এখন আওয়ামীলীগই আওয়ামীলীগের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পীরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র তাজিদুল ইসলাম শামীম সাংবাদিকদের নিকট বলেছেন, নির্বাচনে জয়-পরাজয় থাকবেই। পরাজিত হয়ে ফেফসবুকে এলোমেলো কথা লিখে নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করা ঠিক না। যিনি এসব বির্তকিত কথা লিখেছেন তিনি একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি। আমরা তার কাছে এমন কথা আশা করিনা।
ঐ নির্বাচনে প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম। পরাজিত প্রার্থীর অভিযোগের বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এখানে সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কারও আপত্বি থাকলে বিধি মোতাবেক তিনি আইনের আশ্রয় নিতে পারেন।
COMMENTS