এনএনবি নিউজ
সংবাদমাধ্যম নিরপেক্ষভাবে কাজ করলে বিরোধী দলের চেয়েও অনেক বেশি অবদান রাখতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, ‘বিএনপির একটা ভাগ্য আছে, বিশেষ করে গণমাধ্যমের জন্য। বিএনপি ক্ষমতায় থাকলেও সমালোচিত, বিরোধী দলে থাকলেও সমালোচিত। এখানে গণমাধ্যমের একটি বড় স্বাধীনতা রয়েছে।’ তবে সরকার বা ক্ষমতাশীন দলের বিরুদ্ধে লেখা যায় না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘অনেক সময় আমার বিরুদ্ধেও সংবাদ প্রচার করা হয়। কিন্তু আমি সমালোচনা সহ্য করি। কোনও সম্পাদককেও ফোন করি না। কারণ আমার দলের প্রতিষ্ঠাতা সমালোচনা সত্ত্বেও উত্তর দিতেন না, ধৈর্য ধরতেন। গণতন্ত্রের জন্য ধৈর্য খুব জরুরি। আর সমালোচনা হলো গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।’
বাংলাদেশ সিভিল রাইটস সোসাইটির ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারের সমালোচনা করে গয়েশ্বর বলেন, ‘সরকার কতটা দুর্বল হলে ধমক দেয়? সরকার যদি সবল হতো তাহলে কিন্তু ধমক দিতো না। একটা মানুষ কখন হাতে লাঠি নেয়? কখন সে হুইল চেয়ারে বসে? যখন সে দুর্বল। সরকার এরকম হুইল চেয়ারে করে দেশে-বিদেশে ঘুরছে। তাদের হাঁটার কোনও শক্তি নেই বলেই যাদের দিয়ে ভালো কাজ করা যায় তাদের দিয়ে গোপনে ফোন করায়। পোশাকে করায়, পোশাক ছাড়া এসে পরিচয় দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা বলছেন বিএনপির দুর্দিন। কিন্তু আমি তা মনে করি না। আমি মনে করি এটা দেশের-জাতির-জনগণের দুর্দিন। এখানে বিএনপি কোনও আলাদা বস্তু নয়। বিএনপি চেষ্টা করছে এবং নানান ধরনের হুমকির শিকার হচ্ছে। সুতরাং দেশের দুরবস্থা যেন আগামী প্রজন্ম না দেখে সেজন্য কাজ করতে গিয়ে যদি আমার জীবনও যায় তাহলেও আমি মনে করবো আমার জীবন স্বার্থক।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা জীবন দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে তারা পাকিস্তানের শাসন ব্যবস্থাকে মানতে পারেনি। একটা জায়গায় আমাদের মুক্ত করে দিয়েছে। আর এখন সেই পাকিস্তানের চেয়েও পৈশাচিক বর্তমান সরকারের কর্মকাণ্ড।’
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘জনগণের জয়লাভ বিএনপির বিজয়। বিএনপির নিজস্ব কোনও বিজয়ের স্বার্থকতা নেই। জনগণকে মুক্তি দিতে পারলেই খালেদা জিয়ার মুক্তি। বলা হয় অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা। সব দল অংশ নিলেই সেটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়ে যায় না, সেখানে জনগণের ভোটাধিকার থাকতে হয়। দিনের ভোট রাতে হয়ে গেলে সেটি আর অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয় না। তাই আমাদের ওয়াদা এই সরকারের অধীনে আর কোনও নির্বাচন নয়।’
সোসাইটির চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনফইউজে এর সভাপতি এম. আব্দুল্লাহ। অনুষ্ঠানে সোসাইটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের মাঝে হুইল চেয়ার ও অসহায় মহিলাদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়।
COMMENTS