মুহাম্মদ ইউনূস |
বিশেষ প্রতিনিধি
বাংলাদেশে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দুই মাসের মধ্যেই একাধিক ইস্যু তাদের কার্যক্রমকে চাপে ফেলেছে। নানা সংকট ও প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে সরকারকে নানা দিক থেকে সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু ইস্যু তারা বিগত সরকারের কাছ থেকে পেয়েছে, আবার কিছু নতুন ইস্যু বর্তমান সরকারকে প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এই প্রতিবেদনে আমরা বর্তমান সংকটগুলোর বিস্তারিত আলোচনা করবো।
বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। অধ্যাপক মুশতাক খান বলেন, "সিন্ডিকেটগুলো থামাতে হবে। বাজারে এখনও কিছু সিন্ডিকেট সক্রিয়। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছে, যা ভাঙা প্রয়োজন।"
তিনি আরও বলেন, "যারা আগে বাংলাদেশকে বেছে নিয়েছে, তারা এখন কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, ভারত কিংবা মিয়ানমারের দিকে নজর দিচ্ছে।"
অন্তর্বর্তী সরকার একাধিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, গার্মেন্টস খাতে অস্থিরতা, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, এবং রাজনৈতিক বিতর্কের প্রভাব সরকারের ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সরকারকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে সংকটগুলো সামলাতে হবে। জনগণ দ্রুত পরিবর্তনের প্রত্যাশা করলেও বাস্তবতা হলো, সরকারের হাতে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা এবং কাঠামোর অভাব রয়েছে, যা সমস্যার সমাধানে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
বাংলাদেশে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দুই মাসের মধ্যেই একাধিক ইস্যু তাদের কার্যক্রমকে চাপে ফেলেছে। নানা সংকট ও প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে সরকারকে নানা দিক থেকে সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু ইস্যু তারা বিগত সরকারের কাছ থেকে পেয়েছে, আবার কিছু নতুন ইস্যু বর্তমান সরকারকে প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এই প্রতিবেদনে আমরা বর্তমান সংকটগুলোর বিস্তারিত আলোচনা করবো।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি
বাংলাদেশের বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রবণতা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য এক বিশাল চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে, সাম্প্রতিক ডিমের দাম ডজন প্রতি ২০ টাকা পর্যন্ত বাড়ায় ভোক্তাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন জানায়, গত ২০ দিনে ভোক্তাদের কাছ থেকে ২৮০ কোটি টাকা অতিরিক্ত নেয়া হয়েছে, যা সিন্ডিকেটের কারসাজির ফল।বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। অধ্যাপক মুশতাক খান বলেন, "সিন্ডিকেটগুলো থামাতে হবে। বাজারে এখনও কিছু সিন্ডিকেট সক্রিয়। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছে, যা ভাঙা প্রয়োজন।"
গার্মেন্টস খাত
গার্মেন্টস খাতের শ্রমিকদের দাবিকে কেন্দ্র করে অসন্তোষ অব্যাহত রয়েছে। বিশেষত আশুলিয়া এবং গাজীপুরে বিক্ষিপ্তভাবে আন্দোলন চলছে। বিজিএমইএ-এর সাবেক সভাপতি রুবানা হক জানিয়েছেন, "বিগত কয়েকদিনে অসংখ্য ফ্যাক্টরি বন্ধ ছিল, যার কারণে বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশ ছেড়ে অন্য দেশে চলে যাচ্ছে।"তিনি আরও বলেন, "যারা আগে বাংলাদেশকে বেছে নিয়েছে, তারা এখন কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, ভারত কিংবা মিয়ানমারের দিকে নজর দিচ্ছে।"
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ। গণপিটুনি, হত্যা ও চাঁদাবাজির ঘটনায় সামাজিক অস্থিরতা বাড়ছে। পূজামণ্ডপ কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখাও কঠিন হয়ে পড়েছে। র্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান বলেন, "গুজব ছড়ানোর মাধ্যমে দুষ্কৃতকারীরা পরিস্থিতি খারাপ করার চেষ্টা করছে, যা আমাদের সাইবার ইউনিট মনিটরিং করছে।"সড়কে বিশৃঙ্খলা
গত দুই মাসে ঢাকা এবং আশপাশের এলাকায় যানজট ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। যদিও সাধারণ মানুষ প্রথমে আশা করেছিল যে অন্তর্বর্তী সরকার এই বিশৃঙ্খলা কাটিয়ে উঠতে পারবে, বাস্তবে এর উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। অধ্যাপক ইউনূস ট্রাফিক সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্য পুলিশ এবং বিশেষজ্ঞদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।প্রশাসনে অস্থিরতা
জনপ্রশাসনের অস্থিরতা অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে। বিশেষ করে জেলা প্রশাসকের পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে। সম্প্রতি, জেলা প্রশাসক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে সরকারের পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা প্রশাসনের নীরব অস্থিরতার প্রমাণ বহন করছে।রাজনৈতিক বিতর্ক
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ‘রিসেট বাটন’ মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক চরমে পৌঁছেছে। ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিটিয়েটিভ-এর মঞ্চে দেওয়া বক্তব্য এবং পরবর্তীতে ভয়েস অব আমেরিকার সাক্ষাৎকারে তিনি উল্লেখ করেন যে, পুরোনো দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতি থেকে বের হয়ে নতুনভাবে শুরু করার প্রয়োজনীয়তা আছে। তবে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এই বক্তব্যকে সমালোচনা করেছে এবং সামাজিক মাধ্যমেও হ্যাশট্যাগ 'স্টেপ ডাউন ইউনূস' প্রচার হচ্ছে।অন্তর্বর্তী সরকার একাধিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, গার্মেন্টস খাতে অস্থিরতা, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, এবং রাজনৈতিক বিতর্কের প্রভাব সরকারের ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সরকারকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে সংকটগুলো সামলাতে হবে। জনগণ দ্রুত পরিবর্তনের প্রত্যাশা করলেও বাস্তবতা হলো, সরকারের হাতে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা এবং কাঠামোর অভাব রয়েছে, যা সমস্যার সমাধানে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
COMMENTS