জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে সরকারপ্রধান হিসেবে মুহাম্মদ ইউনূসের প্রথম ভাষণ। ছবি: সংগৃহীত |
জুলীয়াস চৌধুরী
জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অংশগ্রহণ আন্তর্জাতিক মহলে বিশেষ নজর কাড়ে। বিভিন্ন বৈঠক ও আলোচনা সভায় তার উপস্থিতি বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন দিক উন্মোচন করেছে। বিশেষত, দেশের আর্থিক ও কূটনৈতিক সংকট মোকাবিলায় জাতিসংঘের এই সম্মেলন ড. ইউনূস কীভাবে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় অবদান রেখেছেন, তা উঠে এসেছে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাতিসংঘ সফর বাংলাদেশের জন্য কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ ছিল। বৈশ্বিক মঞ্চে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার, অর্থনৈতিক সংস্কার এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই সফর থেকে পাওয়া সাফল্য দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নকে আরও স্থিতিশীল ও টেকসই করার সুযোগ তৈরি করবে।
জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অংশগ্রহণ আন্তর্জাতিক মহলে বিশেষ নজর কাড়ে। বিভিন্ন বৈঠক ও আলোচনা সভায় তার উপস্থিতি বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন দিক উন্মোচন করেছে। বিশেষত, দেশের আর্থিক ও কূটনৈতিক সংকট মোকাবিলায় জাতিসংঘের এই সম্মেলন ড. ইউনূস কীভাবে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় অবদান রেখেছেন, তা উঠে এসেছে।
সফরের তাৎপর্য
ড. ইউনূসের এই সফরটি বিভিন্ন দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং ৪০টি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংস্কার এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে বিশেষ আলোচনা হয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই বৈঠকগুলো বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আর্থিক স্থিতিশীলতা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।অর্থনৈতিক সংস্কার ও সহায়তা
সফরের অন্যতম অর্জন হলো বিশ্বব্যাংকের সাথে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংস্কারের জন্য ৩.৫ বিলিয়ন ডলারের সহায়তার প্রতিশ্রুতি। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বঙ্গের সাথে বৈঠকে এই প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশকে নতুন অর্থনৈতিক ধাপের দিকে নিয়ে যাওয়ার সংকেত দেয়। এছাড়া আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আর্থিক খাতে সুশাসন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।অর্থপাচার প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা
যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারের আলোচনা বিশেষ গুরুত্ব পায়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সাথে বৈঠকে অর্থপাচার প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়, যেখানে বাংলাদেশকে অর্থ ফেরত আনার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতার আশ্বাস দেয়।চীনের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক এবং ভারতের সাথে বৈঠক না হওয়া
জাতিসংঘের ফাঁকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে বাংলাদেশের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে বৈঠক না হওয়া নিয়ে কিছুটা হতাশা থাকলেও বিশ্লেষকরা মনে করেন, দুই দেশের সম্পর্কের ওপর বড় কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না।ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাতিসংঘ সফর বাংলাদেশের জন্য কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ ছিল। বৈশ্বিক মঞ্চে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার, অর্থনৈতিক সংস্কার এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই সফর থেকে পাওয়া সাফল্য দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নকে আরও স্থিতিশীল ও টেকসই করার সুযোগ তৈরি করবে।
COMMENTS