সম্প্রতি ব্যাংকিং খাতের তারল্য সংকট এবং তার প্রভাব আমানতকারীদের ওপর আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। গত মঙ্গলবার ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের রিং রোড শাখায় বেতনের টাকা তুলতে গিয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হন মার্জিয়া প্রভা। তাকে জানানো হয়, একদিনে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা তোলার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। নিরুপায় হয়ে ব্যাংক ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে ম্যানেজার জানান, বর্তমানে তারা লিকুইডিটি সংকটে আছেন এবং পাঁচ হাজারের বেশি টাকা তোলার সুযোগ নেই। এমন পরিস্থিতিতে প্রভাসহ আরও অনেক গ্রাহক ক্ষুব্ধ হয়ে ব্যাংকে উপস্থিত ছিলেন।
একই রকম ভোগান্তির শিকার হন উন্নয়ন সংস্থার একজন কর্মী। গুলশান শাখায় ১৬ লাখ টাকার এফডিআর ভাঙার পর, তার ১০ লাখ টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যমে অন্য অ্যাকাউন্টে পাঠানোর অনুরোধ জানালে, পরপর তিনবার সেই পে-অর্ডার বাউন্স করে। ব্যাংক ম্যানেজার তার সঙ্গে আলাপ করে জানান, পরিস্থিতি জটিল এবং সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। প্রায় এক মাস পরেও তিনি মাত্র দুই লাখ টাকা তুলতে সক্ষম হন। এ ধরনের অভিযোগ শুধুমাত্র ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকেই সীমাবদ্ধ নয়, আরও বেশ কয়েকটি ব্যাংকের গ্রাহকরা একই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের রিং রোড শাখার ম্যানেজার সালেহ আহমদ জানিয়েছেন, তারা নিয়মিত তারল্য সংকটে ভুগছেন এবং শাখায় ক্যাশের অভাবে গ্রাহকদের পূর্ণ চাহিদা মেটাতে পারছেন না। এ কারণে দৈনিক উত্তোলনের পরিমাণ সীমিত করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। নতুন বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান দাবি করেন, এই সংকট সাময়িক এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।
তারল্য সংকটের পটভূমি
গত আগস্ট মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের সীমা নির্ধারণ করা হয়, যা পরবর্তীতে সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে তুলে নেয়া হলেও তারল্য সংকটে ভুগছে কিছু ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক তথ্যে দেখা গেছে, বেসরকারি খাতের নয়টি ব্যাংকে তারল্য ঘাটতি বেড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, সোশ্যাল ইসলামী, ন্যাশনাল, ইউনিয়ন ব্যাংকসহ আরও কয়েকটি ব্যাংক ২৯ হাজার কোটি টাকার তারল্য সহায়তা চেয়েছে।
ব্যাংকিং খাতের দীর্ঘদিনের দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনা এ সংকটের অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, তারল্য সংকটের মূল কারণ হিসেবে ব্যাংক থেকে অনিয়মিত ঋণ প্রদান এবং ঋণ ফেরত না আসা, পাশাপাশি গ্রাহকদের আস্থাহীনতা কাজ করছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপ
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আশ্বাস দিয়েছেন, এক বছর সময় দিলে সংকটে থাকা ব্যাংকগুলো ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে। তবে, গ্রাহকদের অপ্রয়োজনীয় উত্তোলন থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সংকট সমাধানে অতিরিক্ত তারল্য থাকা ব্যাংক থেকে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে ঋণ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক মধ্যস্থতার দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়াও দুর্বল ব্যাংকগুলোর কাছে ঋণ ফেরত দিতে না পারলে বাংলাদেশ ব্যাংক সেই দায়িত্ব নেবে।
আশার আলো
বাংলাদেশ ব্যাংক, ব্যাংকিং খাতের অস্থিতিশীলতা কাটাতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে। আর্থিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে দুর্বল ব্যাংকগুলোর তারল্য ঘাটতি পূরণের কাজ চলছে। ফলে ব্যাংকে রাখা আমানতকারীদের টাকা ঝুঁকির মধ্যে নেই বলে আশ্বস্ত করা হচ্ছে। তবুও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রাহকরা যদি অযথা আতঙ্কিত হয়ে টাকা তুলতে থাকেন, তবে এই সংকট আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
একই রকম ভোগান্তির শিকার হন উন্নয়ন সংস্থার একজন কর্মী। গুলশান শাখায় ১৬ লাখ টাকার এফডিআর ভাঙার পর, তার ১০ লাখ টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যমে অন্য অ্যাকাউন্টে পাঠানোর অনুরোধ জানালে, পরপর তিনবার সেই পে-অর্ডার বাউন্স করে। ব্যাংক ম্যানেজার তার সঙ্গে আলাপ করে জানান, পরিস্থিতি জটিল এবং সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। প্রায় এক মাস পরেও তিনি মাত্র দুই লাখ টাকা তুলতে সক্ষম হন। এ ধরনের অভিযোগ শুধুমাত্র ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকেই সীমাবদ্ধ নয়, আরও বেশ কয়েকটি ব্যাংকের গ্রাহকরা একই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের রিং রোড শাখার ম্যানেজার সালেহ আহমদ জানিয়েছেন, তারা নিয়মিত তারল্য সংকটে ভুগছেন এবং শাখায় ক্যাশের অভাবে গ্রাহকদের পূর্ণ চাহিদা মেটাতে পারছেন না। এ কারণে দৈনিক উত্তোলনের পরিমাণ সীমিত করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। নতুন বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান দাবি করেন, এই সংকট সাময়িক এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।
তারল্য সংকটের পটভূমি
গত আগস্ট মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের সীমা নির্ধারণ করা হয়, যা পরবর্তীতে সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে তুলে নেয়া হলেও তারল্য সংকটে ভুগছে কিছু ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক তথ্যে দেখা গেছে, বেসরকারি খাতের নয়টি ব্যাংকে তারল্য ঘাটতি বেড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, সোশ্যাল ইসলামী, ন্যাশনাল, ইউনিয়ন ব্যাংকসহ আরও কয়েকটি ব্যাংক ২৯ হাজার কোটি টাকার তারল্য সহায়তা চেয়েছে।
ব্যাংকিং খাতের দীর্ঘদিনের দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনা এ সংকটের অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, তারল্য সংকটের মূল কারণ হিসেবে ব্যাংক থেকে অনিয়মিত ঋণ প্রদান এবং ঋণ ফেরত না আসা, পাশাপাশি গ্রাহকদের আস্থাহীনতা কাজ করছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপ
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আশ্বাস দিয়েছেন, এক বছর সময় দিলে সংকটে থাকা ব্যাংকগুলো ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে। তবে, গ্রাহকদের অপ্রয়োজনীয় উত্তোলন থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সংকট সমাধানে অতিরিক্ত তারল্য থাকা ব্যাংক থেকে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে ঋণ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক মধ্যস্থতার দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়াও দুর্বল ব্যাংকগুলোর কাছে ঋণ ফেরত দিতে না পারলে বাংলাদেশ ব্যাংক সেই দায়িত্ব নেবে।
আশার আলো
বাংলাদেশ ব্যাংক, ব্যাংকিং খাতের অস্থিতিশীলতা কাটাতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে। আর্থিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে দুর্বল ব্যাংকগুলোর তারল্য ঘাটতি পূরণের কাজ চলছে। ফলে ব্যাংকে রাখা আমানতকারীদের টাকা ঝুঁকির মধ্যে নেই বলে আশ্বস্ত করা হচ্ছে। তবুও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রাহকরা যদি অযথা আতঙ্কিত হয়ে টাকা তুলতে থাকেন, তবে এই সংকট আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
COMMENTS