পুরান ঢাকাকে যুক্ত করতে মেট্রোরেল রুটে পরিবর্তন আসছে

এনএনবি, ঢাকা

রাজধানী ঢাকার পুরান ঢাকাকে মেট্রোরেলের মাধ্যমে দ্রুত সংযুক্ত করার লক্ষ্যে নতুন পরিকল্পনা করছে পরিকল্পনা কমিশন। দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই সংযোগ স্থাপনে কমিশন এমআরটি লাইন-৫ সাউদার্ন রুটের পরিবর্তে এমআরটি লাইন-২ কে বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করছে।

বর্তমানে এমআরটি লাইন-৫ এর রুট নির্ধারিত হয়েছে গাবতলী থেকে দশেরকান্দি পর্যন্ত, কিন্তু পরিকল্পিত এমআরটি লাইন-২ রুটটি গাবতলী থেকে শুরু হয়ে মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, গুলিস্তান, মতিঝিল হয়ে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। বিশেষ একটি শাখা লাইন গুলিস্তান থেকে সদরঘাট পর্যন্ত স্থাপিত হলে পুরান ঢাকাকে এই মেট্রোরেল নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত করা সম্ভব হবে। এই রুটটি পুরান ঢাকার বিশাল জনগোষ্ঠীকে সেবা প্রদান করবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তার মতে, এমআরটি লাইন-৫ এর কাজ পুরোপুরি বাতিল করা হতে পারে, তবে এর কিছু অংশের কাজ বাস্তবায়নের পরিকল্পনাও রয়েছে। অন্যদিকে, এমআরটি লাইন-২ এর সম্ভাব্যতাও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে।

নতুন এই প্রস্তাবগুলো পরিকল্পনা উপদেষ্টার নির্দেশনায় তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা। তারা আরও বলেন, যেকোনো প্রকল্প অনুমোদনের আগে সরকার সেগুলো যথাযথভাবে পর্যালোচনা করবে। এমআরটি লাইন-৫ এখনো পর্যালোচনার পর্যায়ে রয়েছে এবং শিগগিরই এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বর্তমানে ঢাকার কোনো মেট্রোরেল রুট পুরান ঢাকার সাথে সরাসরি সংযুক্ত নয়। তবে এমআরটি লাইন-২ নির্মাণ হলে তা পুরান ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের মধ্যে একটি সংযোগ স্থাপন করবে।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) তথ্য অনুযায়ী, ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন-২ নির্মাণে আনুমানিক ব্যয় হবে ৬০,৮৩৭ কোটি টাকা। অন্যদিকে, গাবতলী থেকে দশেরকান্দি পর্যন্ত ১৭.২ কিলোমিটার এমআরটি লাইন-৫ এর জন্য খরচ হবে ৫৪,৬১৮ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের জন্য এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক এবং দক্ষিণ কোরিয়া সম্মিলিতভাবে ৩৯,১৩৮ কোটি টাকা অর্থায়ন করতে সম্মত হয়েছে। বাকি ১৫,৪৮১ কোটি টাকা সরকারের কাছ থেকে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

বিকল্প প্রস্তাব অনুযায়ী, এমআরটি লাইন-২ এর গাবতলী থেকে কারওয়ানবাজার অংশ বাদ দিয়ে বিজয় সরণীতে একটি ব্রাঞ্চ লাইন সংযুক্ত করার চিন্তা করা হচ্ছে। এ ছাড়া এমআরটি লাইন-৫ এর পুরো প্রকল্প আপাতত স্থগিত রেখে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হলে তা পুনর্বিবেচনার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।