$type=ticker$c=12$cls=0$b=0

মোদি-ইউনূস বৈঠক: কূটনৈতিক অস্বস্তি নাকি নতুন সূচনা?

ড. মুহাম্মদ ইউনূস (বামে) | নরেন্দ্র মোদি (ডানে)
বিশেষ প্রতিনিধি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সম্ভাব্য বৈঠক ঘিরে চলছে নানা গুঞ্জন। শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ, ভারতের স্বার্থ ও কৌশলগত সম্পর্ক নিয়ে গড়ে উঠেছে জটিল সমীকরণ। দুই নেতার নিউ ইয়র্কে সম্ভাব্য সাক্ষাৎ কীভাবে পাল্টে দিতে পারে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের গতিপথ? বিশ্লেষকদের মতে, মোদি-ইউনূস বৈঠক ভারতের জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে, তবে বদলে দিতে পারে আঞ্চলিক রাজনৈতিক সমীকরণ।

বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আগ্রহী নন। কারণ, তিনি শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ-সংক্রান্ত জটিল বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে চাচ্ছেন না।

ওয়াশিংটনের উইলসন সেন্টারের সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, ঢাকার সাথে সম্পর্ক ভারতের জন্য "অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়" হয়ে উঠেছে। যেকোনো উচ্চপর্যায়ের সাক্ষাতে অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে আলোচনা করার ক্ষেত্রে ভারতকে এমন বিষয়গুলো নিয়ে মনোযোগী হতে হবে, যা তারা বর্তমানে এড়িয়ে যেতে চায়।

কুগেলম্যান বলেন, "প্রধান সমস্যা হলো, [বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী] শেখ হাসিনার ভারতের উপস্থিতি।"

তিনি উল্লেখ করেন, অন্তর্বর্তী সরকার তাকে (হাসিনা) বাংলাদেশে প্রত্যর্পণের দাবি করলেও দিল্লি তাকে ছাড়তে চাচ্ছে না। কারণ, হাসিনার ভারতের অনেক নেতার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, "যদি মোদি ইউনুসের সাথে সাক্ষাৎ করেন, তবে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা এড়ানো অসম্ভব হবে।"

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম গত সপ্তাহে জানিয়েছে, ঢাকা থেকে আসা মোদি এবং ইউনুসের মধ্যে বৈঠকের অনুরোধ মানা হবে কি না, তা দিল্লি এখনও নিশ্চিত করেনি । তবে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেওয়ার জন্য এ মাসের শেষের দিকে দুজনেরই নিউ ইয়র্কে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে।

গত মাসে তাদের প্রথম উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগের সময়  ইউনুস মোদির সাথে ফোনে কথা বলেন এবং আশ্বস্ত করেন, অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশে হিন্দুসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোর নিরাপত্তা ও সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেবে।

তবে রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানান, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালীন যেকোনো বৈঠক আয়োজনের জন্য "নিয়মিত প্রক্রিয়া" অনুসরণ করতে হবে। কারণ এসব আলোচনা পূর্বপরিকল্পিত নয়।

গত মাসে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালানোর পর ড. ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেন। ৫ আগস্ট ছাত্রদের নেতৃত্বাধীন এক বিপ্লবের পর শেখ হাসিনার দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটে।

রোববার বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জানিয়েছে, তারা ভারতের কাছ থেকে হাসিনার প্রত্যর্পণ নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে, যাতে আগস্টে গণবিক্ষোভ দমনে চালানো প্রাণঘাতী সহিংসতার মামলায় তার বিচার করা যায়।

প্রাথমিকভাবে শেখ হাসিনার ভারতে অল্প কিছুদিন থাকার কথা ছিল। তবে প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে শেখ হাসিনার আশ্রয় প্রার্থনার চেষ্টা এখন পর্যন্ত সফল হয়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমিন বলেন, মোদি-ইউনুস বৈঠক ভারতের জন্য "অস্বস্তিকর" হলেও, বৈঠকটি যত দ্রুত হবে, দিল্লির জন্য ততই ভালো হবে।

তিনি বলেন, "[দিল্লি] বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে 'বাংলাদেশ ২.০' এর সাথে জড়িত হওয়া শুরু করতে হবে, যা কখনোই ভারতের সমীকরণে ছিল না।"

প্রথম বৈঠকটি "পরিবর্তিত বাস্তবতাগুলো স্বীকার করা এবং দুই দেশের মধ্যে বরফ গলানোর" লক্ষ্যে করা উচিত বলে মন্তব্য করেন লাইলুফার ইয়াসমিন।

ইয়াসমিন আরও বলেন, ভারত হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের ওপর বাজি ধরেছিল এবং বাংলাদেশিদের "আকাঙ্ক্ষা" বুঝতে চেষ্টা করেনি।

তিনি বলেন, "ভারতের এটা বোঝার সময় এসেছে, দুই দেশের সম্পর্ক শুধু একটি রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে পরিচালিত হতে পারে না।"

ভারতের ৫৩ বছরের বাংলাদেশ নীতিতে দূরদর্শিতার অভাব ছিল উল্লেখ করে ইয়াসমিন বলেন, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো ভারতের জন্য একটি "জাগরণ" হতে পারে, যাতে তারা তাদের প্রতিবেশীদের সাথে একটি "নতুন এবং সৃজনশীল" সম্পর্ক তৈরি করতে পারে।

ইয়াসমিন যোগ করেন, "দক্ষিণ এশিয়া পরিচালনা করার পরিবর্তে দিল্লিকে বৈশ্বিক নেতা হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার জন্য এ অঞ্চলটির সম্মতি অর্জন করতে হবে।"

হাসিনা তার শাসনামলে ভারতের শীর্ষ নেতাদের সাথে গভীর সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন। তার জুলাই মাসের দিল্লি সফরে সামুদ্রিক সহযোগিতা, ডিজিটাল পার্টনারশিপ, রেল সংযোগ এবং মহাকাশ প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দশটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

তবে তার শাসনকালে জোরপূর্বক গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং বিরোধীদলকে দমন করার অভিযোগ উঠেছিল। বাংলাদেশের শেষ তিনটি সাধারণ নির্বাচনে (এ বছরের জানুয়ারির নির্বাচনসহ) কারচুপি করার অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে।

ভারত সর্বশেষ নির্বাচনের ফলাফলকে স্বাগত জানায়, যার ফলে অনেক বাংলাদেশি "ইন্ডিয়া আউট" ক্যাম্পেইন শুরু করে। দিল্লির বিরুদ্ধে হাসিনাকে সমর্থন করার অভিযোগ আসে, যা ভারত স্বার্থ রক্ষার জন্য করেছে বলে অভিযোগে বলা হয়।

ভারতের অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সহযোগী ফেলো সোহিনী বোস বলেন, দিল্লি হাসিনা সরকারের সাথে ভালোভাবে কাজ করলেও এই সম্পর্ক পরস্পর নির্ভরশীলতার ওপর ভিত্তি করে ছিল।

তিনি বলেন, "এই বাস্তবতা অপরিবর্তিত রয়েছে।" তিনি যোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকার ও ভারতের মধ্যে "অবশ্যই" একটি কার্যকর সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে কূটনৈতিক সম্পর্ক "দুর্বল" হওয়ায় সোহিনী বলেন, সিদ্ধান্তগুলো "তাড়াহুড়ো করে নেওয়া যাবে না" এবং সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের জন্য সবচেয়ে ভাল উপায় হবে, যোগাযোগ এবং শক্তি প্রকল্পগুলোতে মনোযোগ দেওয়া।

গত নভেম্বর দুই দেশ তিনটি প্রধান যোগাযোগ এবং শক্তি প্রকল্প উদ্বোধন করে, যার মধ্যে প্রতিবেশীদের সংযুক্ত করতে একটি রেললাইন অন্তর্ভুক্ত ছিল। এটি ভারতের সহায়তায় নির্মাণ করার কথা ছিল।

মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, দুই দেশের শক্তিশালী বাণিজ্য, নিরাপত্তা এবং কৌশলগত স্বার্থের কারণে "সীমান্ত নিরাপত্তা সম্পর্কিত জরুরি আলোচনা" পরিচালনা করা কঠিন হবে, যদি দুদেশের সম্পর্কের অবনতি হয়।

বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার আর ভারত এশিয়ায় বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারতে ১.৯৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে এবং মোট দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য দাঁড়িয়েছে ১৪.০১ বিলিয়ন ডলার।

কুগেলম্যান বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রদূতরা তাদের নিজ সরকারের সাথে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারেন যাতে "উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের জন্য পথ সুগম করা যায়।"

তবে তিনি উল্লেখ করেন, হাসিনা পরবর্তী যুগে বাংলাদেশের রাজনীতিতে গভীর পরিবর্তনের কারণে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যত দূরেই যাক, এর সীমাবদ্ধতা থাকবে।

আওয়ামী লীগ বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অনুপস্থিত থাকার কারণে কুগেলম্যান বলেন, "ভারতের সমালোচনা বা কিছু ক্ষেত্রে ভারতের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য শত্রুতা প্রকাশ করতে পারে"– সেসব পার্টি এবং প্রতিষ্ঠান এই শূন্যস্থান পূরণ করতে পারে।

ঢাকা যুক্তি দিতে পারে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক "উষ্ণ না হলেও" দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করবে। কিন্তু কুগেলম্যান মনে করেন, এটি ভারতের জন্য উদ্বেগের বিষয় হবে।

হাসিনার শাসনামলে ভারত যে গভীর, কৌশলগত অংশীদারিত্ব উপভোগ করেছিল, সেটি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা কম।

কুগেলম্যান বলেন, "সম্পর্ক সম্ভবত আরও বেশি লেনদেনমূলক এবং কৌশলগত হবে।"

সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট

COMMENTS

ফেসবুকে ফলো করুন...


Developed by Julius Choudhury
নাম

অপরাধ,81,অর্থনীতি,120,আইন ও আদালত,19,আন্তর্জাতিক,33,আবহাওয়া,25,আশুলিয়া,1,এভিয়েশন,3,কক্সবাজার,5,কলকাতা,2,কুড়িগ্রাম,9,কুমিল্লা,5,কুষ্টিয়া,8,কূটনীতি,3,কৃষি,14,খাগড়াছড়ি,1,খুলনা,1,খেলা,74,গণমাধ্যম,178,গাইবান্ধা,2,গাজীপুর,188,গোপালগঞ্জ,5,চট্টগ্রাম,15,চাঁদপুর,1,চাকরি,5,জয়পুরহাট,2,জাতীয়,2,জাপান,1,জামালপুর,5,টাঙ্গাইল,5,ঠাকুরগাঁও,1,ঢাকা,1,ঢাবি,1,দিনাজপুর,5,ধর্ম,17,নড়াইল,3,নবাবগঞ্জ,1,নাটোর,2,নীলফামারী,1,নেত্রকোণা,8,নেপাল,1,নোয়াখালী,2,পরিবেশ,11,পাকিস্তান,2,পাবনা,108,প্রবাস,4,প্রযুক্তি,51,ফিলিপাইন,1,ফেনী,2,বগুড়া,1,বরিশাল,3,বাং,1,বাগেরহাট,2,বান্দরবান,9,বিচিত্র,2,বিনোদন,22,বিশেষ প্রতিবেদন,16,বিশ্ব,243,বেনাপোল,1,ব্যাংক,1,ভারত,5,ভুটান,1,ভ্রমণ,9,মতামত,14,ময়মনসিংহ,4,মানিকগঞ্জ,1,মিয়ানমার,1,মুন্সীগঞ্জ,1,মেহেরপুর,1,যশোর,1,যুক্তরাষ্ট্র,2,যোগাযোগ,3,রংপুর,273,রাঙ্গামাটি,1,রাজধানী,69,রাজনীতি,183,রাজশাহী,2,রাশিয়া,2,লক্ষ্মীপুর,1,শরীয়তপুর,2,শিক্ষা,95,শিল্প ও সংস্কৃতি,2,শেরপুর,1,সংস্কৃতি,7,সাতক্ষীরা,2,সারাদেশ,464,সাহিত্য,7,সিলেট,6,সুনামগঞ্জ,1,স্বাস্থ্য,56,
ltr
item
NNB - News Network of Bangladesh: মোদি-ইউনূস বৈঠক: কূটনৈতিক অস্বস্তি নাকি নতুন সূচনা?
মোদি-ইউনূস বৈঠক: কূটনৈতিক অস্বস্তি নাকি নতুন সূচনা?
শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ, ভারতের স্বার্থ ও কৌশলগত সম্পর্ক নিয়ে গড়ে উঠেছে জটিল সমীকরণ। দুই নেতার নিউ ইয়র্কে সম্ভাব্য সাক্ষাৎ কীভাবে পাল্টে দিতে পারে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের গতিপথ?
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj8jvkleXO_EbolFrV2Zb8HONreaI10DjWY8QOY5VFwdYq6_8eTetDFE9dlmerW0CJIXEg0GBG4onqcXKu6VrMVbVxXu2Z9_CvTpDMndK1e0L3oQsqP_dv0FftCfT1eMdhVp9vvhlKizuJZNSKEiJ9hTbbD4jNvaCljxVegvD9BrwIJEG751c9PUU0YkxY/s16000/news.jpg
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj8jvkleXO_EbolFrV2Zb8HONreaI10DjWY8QOY5VFwdYq6_8eTetDFE9dlmerW0CJIXEg0GBG4onqcXKu6VrMVbVxXu2Z9_CvTpDMndK1e0L3oQsqP_dv0FftCfT1eMdhVp9vvhlKizuJZNSKEiJ9hTbbD4jNvaCljxVegvD9BrwIJEG751c9PUU0YkxY/s72-c/news.jpg
NNB - News Network of Bangladesh
https://edition.nnb.com.bd/2024/09/0124091323.html
https://edition.nnb.com.bd/
https://edition.nnb.com.bd/
https://edition.nnb.com.bd/2024/09/0124091323.html
true
8430089477468953663
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts সব দেখনু Read More Reply Cancel reply Delete By হোম PAGES POSTS সব দেখনু সম্পর্কিত বিষয় ARCHIVE খোঁজ ALL POSTS Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy Table of Content