
এনএনবি, গাজীপুর
গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরের বিশ্ব ইজতেমায় প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত রোববার (০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪) সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪) বিকেলে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কন্ট্রোল রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মাহবুব আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
অসংখ্য মুসল্লিদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছে ইজতেমা ময়দান। জায়গা না পেয়ে অনেকেই ময়দানের আশপাশের বিভিন্ন সড়ক, ফুটপাত ও তুরাগ নদীর তীরে অবস্থান নিয়েছেন।
দেশের নানা প্রান্ত ও বিদেশ থেকে আগত মুসল্লিরা নিজ নিজ খিত্তায় অবস্থান নিয়েছেন। অনেক মুসল্লি ময়দানে ও খিত্তায় জায়গা না পেয়ে সড়ক, ফুটপাত ও অলিগলিতে শামিয়ানা নির্মাণ করেছেন। এর ফলে একদিকে ওই স্থানে যানবাহন চলাচল অনেকটাই ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে এসব স্থানে অবস্থান নেওয়া মুসল্লিরা রান্নাবান্না, খাবার পানি, ওজুর পানিসহ বিভিন্ন দুর্ভোগে পড়েছেন। অনেকেই ওজু করতে এক বদনা পানি কিনছেন ১০ টাকা দিয়ে। এছাড়াও নিজস্ব খরচে ছাউনি ও শামিয়ানা নির্মাণের জন্য বাঁশ-কাগজ কিনতে দিতে হচ্ছে দ্বিগুণ দাম। রয়েছে রান্না ও খাবার পানির সংকট।
ইজতেমার আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, ইজতেমা ময়দানের ১০৫টি খিত্তা ছাড়াও সড়ক, মহাসড়কের পাশে ও অলিগলিতে অবস্থান নিয়েছেন দেশ-বিদেশের লাখো মুসল্লি। ফজরের নামাজের পর থেকে পিনপতন নীরবতায় ধর্মীয় বয়ান শুনছেন তারা। বয়ানের পর এগুলো থেকে নেওয়া শিক্ষা নিয়ে প্রতিটি খিত্তায় দলবেঁধে নিজস্ব আমিরের (দলনেতা) নেতৃত্বে হয় আলোচনা।
তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বিরা আরবি, উর্দু ও হিন্দিতে বয়ান করলেও তাৎক্ষণিকভাবে এগুলো বাংলা, ইংরেজিসহ বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হয়।
ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের সুবিধার্থে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা। ১৫ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ময়দানের ভেতরে ও বাইরে কাজ করছে। সিসি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ার দিয়ে পুরো ময়দান ও আশপাশের এলাকা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসন, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের লোকজন সমন্বিতভাবে কাজ করছেন।
এদিকে ধুলা, ময়লা, শীত, বৃষ্টিসহ নানা প্রতিকূলতা উপক্ষো করে ময়দানে আসা সকল মুসল্লিরা মনোযোগ এখন আলেমদের বয়ানের দিকে। আল্লাহু আকবর ধ্বনিতে টঙ্গীর তুরাগতীর মুখিরত। ফজরের নামাজের পর থেকে রাত পর্যন্ত অবিরাম চলছে বিভিন্ন ভাষায় বয়ান। দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট আলেমরা বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বয়ান করছেন। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা মনোনিবেশ করে ইমান, আখলাক ও দ্বীনের বিভিন্ন বয়ান শুনেন। প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিন শনিবার বাদ ফজর থেকে তুরাগতীরে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে লাখ-লাখ মুসল্লি উদ্দেশে চলে পবিত্র কোরআন-হাদিসের আলোকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বয়ান।
বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিনের শুরুতে শনিবার বাদ ফজর মুসল্লিদের উদ্দেশে বয়ান করেন ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমান, তার বয়ান বাংলায় তরজমা করেন বাংলাদেশের মাওলানা আব্দুল মতিন।
বাদ জোহর বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা ইসমাইল গোদরা। বাদ আসর বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা জুহাইরুল হাসান। বাদ আসর যৌতুকবিহীন বিয়ে অনুষ্ঠিত হবে। বাদ মাগরিব বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা। সকালে বয়ানে ওলামায়ে কেরাম বলেন, পরকালের চিরস্থায়ী সুখ শান্তির জন্য আমাদের প্রত্যককে দুনিয়াতে জীবিত থাকা অবস্থায় দ্বীনের দাওয়াতের কাজে জানমাল দিয়ে মেহনত করতে হবে। ইমান ও আমলের মেহনত ছাড়া কেউ হাশরের ময়দানে কামিয়াব হতে পারবে না।
বয়ানে বলা হয়, দাওয়াতের মেহনত হলো নবুওয়াতি মেহনত। এ মেহনত খুলুসিয়াত ও আজমতের সাথে যারা করবে তাদের যে কোনো আমলের ফজিলত বহুগুণ বেড়ে যায়। ইজতেমায় মূল বয়ান উর্দুতে হলেও অংশ নেওয়া বিভিন্ন ভাষাভাষি মুসল্লিদের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে বাংলা, ইংরেজি, আরবি, তামিল, মালয়, তুর্কি ও ফরাসিসহ বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হয়।
তিনি তাবলীগ জামাতের প্রতিপক্ষের উদ্দেশ্যে বলেন, তাবলীগ জামাতে বিভক্তির মূল কারণ হলো ওনারা একজন ব্যক্তিকে (সাদ সাব) মেনে চলেন। আর আমরা একটা জামাতকে মেনে চলি, যারা সকলে মিলে পরামর্শ করেন এবং সেই পরামর্শকে মেনে চলেন।
তিনি বলেন, আমরা মাওলানা জুবায়ের সাবকে ফলো করি না, জোবায়ের সাবসহ একটা জামাত আছে, আমারা সেই জামাতকে মেনে চলি, যারা সকলে মিলে কোনো বিষয়ে পরামর্শ করেন। আমরা সেই পরামর্শকে ফলো করি। ব্যক্তি কখনো নিরাপদ নয়, তবে পরামর্শ নিরাপদ।
তাই তিনি তাদেরকে ‘জোবায়ের পন্থি’ না বলতে সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন। তারা তাদেরকে ‘শুরায়ে নিজাম’ বলার অনুরোধ করেছেন। তারা নিজেদেরকে ‘শুরায়ে নিজাম’ বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
অপরদিকে তাবলীগ জামাতের অপরপক্ষের মুরুব্বী মাওলানা ওয়াসিফুল ইসলাম বলেন, মুফতি আমানুল হকের বক্তব্য সঠিক নয়। সাদ সাব নিজেকে নিজে আমির ঘোষণা করেননি। তাদের একটি পরামর্শক কমিটি আছে, তারাই তাকে আমির বানিয়েছেন এবং যেকোনো বিষয়ে ওই পরামর্শক কমিটি আমিরকে পরামর্শ দেন। পরে তার বাস্তবায়ন করেন আমির। প্রতিপক্ষই ইসলাম তথা ধর্ম প্রচার নিয়ে বিতর্ক করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম, বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান উপস্থিত ছিলেন।
বিয়ে পড়ান ভারতের মাওলানা জুহাইরুল হাসান। আনুষ্ঠানিকতা শেষে বয়ান মঞ্চ থেকে মোনাজাতের মাধ্যমে নব দম্পতিদের সুখ-সমৃদ্ধি কামনা করা হয়।
বিশ্ব ইজতেমার অন্যতম আকর্ষণ যৌতুকবিহীন বিয়ে। বিয়েতে মোহরানা ধার্য করা হয় মোহর ফাতেমীর নিয়মানুযায়ী। এ নিয়ম অনুযায়ী মোহরানার পরিমাণ ধরা হয় দেড়শ’ তোলা রুপা বা তার সমমূল্য অর্থ। বিয়ের জন্য সকাল থেকে অভিভাবকরা হবু দম্পতিদের নাম তালিকাভুক্ত করান। বিয়ের পর বয়ান মঞ্চ থেকে মোনাজাতের মাধ্যমে নব দম্পতিদের সুখ-সমৃদ্ধিময় জীবন কামনা করা হয়। একই সঙ্গে মঞ্চের আশপাশে থাকা মুসল্লিদের মধ্যে খোরমা-খেজুর ছুঁড়ে দেওয়া হয়।
গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরের বিশ্ব ইজতেমায় প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত রোববার (০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪) সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪) বিকেলে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কন্ট্রোল রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মাহবুব আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
অসংখ্য মুসল্লিদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছে ইজতেমা ময়দান। জায়গা না পেয়ে অনেকেই ময়দানের আশপাশের বিভিন্ন সড়ক, ফুটপাত ও তুরাগ নদীর তীরে অবস্থান নিয়েছেন।
দেশের নানা প্রান্ত ও বিদেশ থেকে আগত মুসল্লিরা নিজ নিজ খিত্তায় অবস্থান নিয়েছেন। অনেক মুসল্লি ময়দানে ও খিত্তায় জায়গা না পেয়ে সড়ক, ফুটপাত ও অলিগলিতে শামিয়ানা নির্মাণ করেছেন। এর ফলে একদিকে ওই স্থানে যানবাহন চলাচল অনেকটাই ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে এসব স্থানে অবস্থান নেওয়া মুসল্লিরা রান্নাবান্না, খাবার পানি, ওজুর পানিসহ বিভিন্ন দুর্ভোগে পড়েছেন। অনেকেই ওজু করতে এক বদনা পানি কিনছেন ১০ টাকা দিয়ে। এছাড়াও নিজস্ব খরচে ছাউনি ও শামিয়ানা নির্মাণের জন্য বাঁশ-কাগজ কিনতে দিতে হচ্ছে দ্বিগুণ দাম। রয়েছে রান্না ও খাবার পানির সংকট।
ইজতেমার আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, ইজতেমা ময়দানের ১০৫টি খিত্তা ছাড়াও সড়ক, মহাসড়কের পাশে ও অলিগলিতে অবস্থান নিয়েছেন দেশ-বিদেশের লাখো মুসল্লি। ফজরের নামাজের পর থেকে পিনপতন নীরবতায় ধর্মীয় বয়ান শুনছেন তারা। বয়ানের পর এগুলো থেকে নেওয়া শিক্ষা নিয়ে প্রতিটি খিত্তায় দলবেঁধে নিজস্ব আমিরের (দলনেতা) নেতৃত্বে হয় আলোচনা।
তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বিরা আরবি, উর্দু ও হিন্দিতে বয়ান করলেও তাৎক্ষণিকভাবে এগুলো বাংলা, ইংরেজিসহ বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হয়।
ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের সুবিধার্থে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা। ১৫ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ময়দানের ভেতরে ও বাইরে কাজ করছে। সিসি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ার দিয়ে পুরো ময়দান ও আশপাশের এলাকা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসন, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের লোকজন সমন্বিতভাবে কাজ করছেন।
এদিকে ধুলা, ময়লা, শীত, বৃষ্টিসহ নানা প্রতিকূলতা উপক্ষো করে ময়দানে আসা সকল মুসল্লিরা মনোযোগ এখন আলেমদের বয়ানের দিকে। আল্লাহু আকবর ধ্বনিতে টঙ্গীর তুরাগতীর মুখিরত। ফজরের নামাজের পর থেকে রাত পর্যন্ত অবিরাম চলছে বিভিন্ন ভাষায় বয়ান। দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট আলেমরা বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বয়ান করছেন। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা মনোনিবেশ করে ইমান, আখলাক ও দ্বীনের বিভিন্ন বয়ান শুনেন। প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিন শনিবার বাদ ফজর থেকে তুরাগতীরে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে লাখ-লাখ মুসল্লি উদ্দেশে চলে পবিত্র কোরআন-হাদিসের আলোকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বয়ান।
বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিনের শুরুতে শনিবার বাদ ফজর মুসল্লিদের উদ্দেশে বয়ান করেন ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমান, তার বয়ান বাংলায় তরজমা করেন বাংলাদেশের মাওলানা আব্দুল মতিন।
বাদ জোহর বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা ইসমাইল গোদরা। বাদ আসর বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা জুহাইরুল হাসান। বাদ আসর যৌতুকবিহীন বিয়ে অনুষ্ঠিত হবে। বাদ মাগরিব বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা। সকালে বয়ানে ওলামায়ে কেরাম বলেন, পরকালের চিরস্থায়ী সুখ শান্তির জন্য আমাদের প্রত্যককে দুনিয়াতে জীবিত থাকা অবস্থায় দ্বীনের দাওয়াতের কাজে জানমাল দিয়ে মেহনত করতে হবে। ইমান ও আমলের মেহনত ছাড়া কেউ হাশরের ময়দানে কামিয়াব হতে পারবে না।
বয়ানে বলা হয়, দাওয়াতের মেহনত হলো নবুওয়াতি মেহনত। এ মেহনত খুলুসিয়াত ও আজমতের সাথে যারা করবে তাদের যে কোনো আমলের ফজিলত বহুগুণ বেড়ে যায়। ইজতেমায় মূল বয়ান উর্দুতে হলেও অংশ নেওয়া বিভিন্ন ভাষাভাষি মুসল্লিদের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে বাংলা, ইংরেজি, আরবি, তামিল, মালয়, তুর্কি ও ফরাসিসহ বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হয়।
নিজেদের ‘শুরায়ে নিজাম’ বলার অনুরোধ জোবায়ের পন্থিদের
বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আয়োজনকারী পক্ষের মুরুব্বী মুফতি আমানুল হক তাদেরকে জুবায়ের পন্থি না বলে ‘শুরায়ে নিজাম’ বলার জন্য অনুরোধ করেছেন। টঙ্গীর ইজতেমার শুরুর দিন শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪) বিকেলে ইজতেমার ময়দানে বিদেশি ক্যাম্পের পাশে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।তিনি তাবলীগ জামাতের প্রতিপক্ষের উদ্দেশ্যে বলেন, তাবলীগ জামাতে বিভক্তির মূল কারণ হলো ওনারা একজন ব্যক্তিকে (সাদ সাব) মেনে চলেন। আর আমরা একটা জামাতকে মেনে চলি, যারা সকলে মিলে পরামর্শ করেন এবং সেই পরামর্শকে মেনে চলেন।
তিনি বলেন, আমরা মাওলানা জুবায়ের সাবকে ফলো করি না, জোবায়ের সাবসহ একটা জামাত আছে, আমারা সেই জামাতকে মেনে চলি, যারা সকলে মিলে কোনো বিষয়ে পরামর্শ করেন। আমরা সেই পরামর্শকে ফলো করি। ব্যক্তি কখনো নিরাপদ নয়, তবে পরামর্শ নিরাপদ।
তাই তিনি তাদেরকে ‘জোবায়ের পন্থি’ না বলতে সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন। তারা তাদেরকে ‘শুরায়ে নিজাম’ বলার অনুরোধ করেছেন। তারা নিজেদেরকে ‘শুরায়ে নিজাম’ বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
অপরদিকে তাবলীগ জামাতের অপরপক্ষের মুরুব্বী মাওলানা ওয়াসিফুল ইসলাম বলেন, মুফতি আমানুল হকের বক্তব্য সঠিক নয়। সাদ সাব নিজেকে নিজে আমির ঘোষণা করেননি। তাদের একটি পরামর্শক কমিটি আছে, তারাই তাকে আমির বানিয়েছেন এবং যেকোনো বিষয়ে ওই পরামর্শক কমিটি আমিরকে পরামর্শ দেন। পরে তার বাস্তবায়ন করেন আমির। প্রতিপক্ষই ইসলাম তথা ধর্ম প্রচার নিয়ে বিতর্ক করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম, বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্ব ইজতেমায় যৌতুকবিহীন ৭২টি বিয়ে সম্পন্ন
বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে যৌতুকবিহীন ৭২টি বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। ইজতেমার দ্বিতীয় দিন শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪) বাদ আছর ইজতেমা মঞ্চের পাশে এই বিয়ের আসর বসে। সেখানে বর ও কনে পক্ষের লোকজনের উপস্থিতিতে বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।বিয়ে পড়ান ভারতের মাওলানা জুহাইরুল হাসান। আনুষ্ঠানিকতা শেষে বয়ান মঞ্চ থেকে মোনাজাতের মাধ্যমে নব দম্পতিদের সুখ-সমৃদ্ধি কামনা করা হয়।
বিশ্ব ইজতেমার অন্যতম আকর্ষণ যৌতুকবিহীন বিয়ে। বিয়েতে মোহরানা ধার্য করা হয় মোহর ফাতেমীর নিয়মানুযায়ী। এ নিয়ম অনুযায়ী মোহরানার পরিমাণ ধরা হয় দেড়শ’ তোলা রুপা বা তার সমমূল্য অর্থ। বিয়ের জন্য সকাল থেকে অভিভাবকরা হবু দম্পতিদের নাম তালিকাভুক্ত করান। বিয়ের পর বয়ান মঞ্চ থেকে মোনাজাতের মাধ্যমে নব দম্পতিদের সুখ-সমৃদ্ধিময় জীবন কামনা করা হয়। একই সঙ্গে মঞ্চের আশপাশে থাকা মুসল্লিদের মধ্যে খোরমা-খেজুর ছুঁড়ে দেওয়া হয়।
ইজতেমায় ৪৯ দেশ থেকে এসেছেন ২৩০৪ জন
বিশ্ব ইজতেমার শনিবার সকাল ৭টা পর্যন্ত ৪৯টি দেশের বিদেশি মুসল্লি এসেছেন ২ হাজার তিনশত চারজন। এর মধ্যে উর্দু খিমায় আগত বিদেশি মুসল্লি ৭শত ৫০ জন। ইংলিশ খিমায় ৭শত ৭৬ জন। আরব খিমায় ২ শত ৪২ জন। বাংলা খিমায় ৫ শত ৩৬ জন।ইজতেমা ময়দান থেকে ৪৫ হকার আটক
ইজতেমা ময়দানে এলোমেলোভাবে দোকান বসিয়ে যানজট সৃষ্টির অভিযোগে টঙ্গী পূর্ব ও পশ্চিম থানা পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে ৪৫ হকারকে আটক করেছে।শনিবার দুপুর ১২টায় টঙ্গী ও পূর্ব পশ্চিম থানায় খোঁজ নিয়ে এই তথ্য জানা যায়।
টঙ্গী পূর্ব থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই ইয়াসির আরফাত জানান, সরকারি নির্দেশ অমান্য করে রাস্তায় হকার বসে কৃত্রিম যানজট সৃষ্টির অভিযোগে টঙ্গী পূর্ব থানায় ২১ জন হকারকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন জানান, ফুটপাত বন্ধ করে মুসল্লিদের যাতায়াতে বিঘ্ন সৃষ্টির অভিযোগে ২৪ জন হকারকে আটক করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
ইজতেমা মাঠে আরও ৩ মুসল্লির মৃত্যু
বিশ্ব ইজতেমায় আরও তিন মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ইজতেমায় ১০ জনের মৃত্যু হলো।শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪) দুপুর থেকে শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা পর্যন্ত ইজতেমা ময়দানে তিন মুসল্লির মৃত্যু হয়। বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগ ও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তারা মারা যান।
মারা যাওয়া মুসল্লিরা হলেন শেরপুর সদরের জুগনিবাগ গ্রামের মৃত শমশের আলীর ছেলে নওশের আলী (৬৫), ভোলার সামানদার গ্রামের বেলায়েত হোসেনের ছেলে আব্দুল কাদের (৫৫) ও নেত্রকোনা সদরের কালিয়াঝুড়ি এলাকার হোসেন আহম্মদের ছেলে স্বাধীন (৪৫)।
এর আগে বুধ ও বৃহস্পতিবার মারা যান চারজন। এছাড়া, ময়দানে আসার সময় এক পুলিশ সদস্যসহ তিনজনের মৃত্যু হয়।
ইজতেমা আয়োজক কমিটির গণমাধ্যম সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মারা যাওয়া চার মুসল্লি হলেন নেত্রকোনা থানার কুমারী বাজার গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আবদুস সাত্তার (৭০), একই জেলার বুড়িঝুড়ি গ্রামের স্বল্পদুগিয়া গ্রামের আব্দুস সোবহানের ছেলে এখলাস মিয়া (৬৮), ভোলার ভোল্লা গ্রামের নজির আহমেদের ছেলে শাহ আলম (৬০) ও জামালপুরের তুলশীপুর এলাকার পাকুল্লা গ্রামের হজরত আলীর ছেলে মতিউর রহমান (৬০)।
ইজতেমা ময়দানে আসার সময় মারা যাওয়া তিনজন হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানার ধামাউরা গ্রামের ইউনুস মিয়া (৬০), চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার চৌহদ্দীটোলা গ্রামের জামান মিয়া (৪০) ও পুলিশ সদস্য হাসান উজ্জামান (৩০)।
আখেরি মোনাজাতের দিন যানবাহন চলাচলে বিশেষ নির্দেশনা
বিশ্ব ইজতেমায় রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪) সকাল ৯টা থেকে ১০টার ভেতর অনুষ্ঠিত হবে প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান। আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন বাংলাদেশের মাওলানা জোবায়ের।এদিকে আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে বিশেষ ট্রাফিক পরিকল্পনা নিয়েছে পুলিশ। থাকছে বিশেষ ট্রেন ও বাসের ব্যবস্থা। আখেরি মোনাজাতে তাবলিগ জামাতের অনুসারী মুসল্লি ছাড়াও গাজীপুর, ঢাকা, সাভার, নরসিংদীসহ আশপাশের জেলার সাধারণ মুসল্লিরা অংশ গ্রহণ করবেন। তাদের যাতায়াতের সুবিধার্থে বিশেষ বাস সার্ভিস ও ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
টঙ্গী রেলওয়ে জংশন স্টেশন মাস্টার মো. রাকিবুর রহমান জানান, ইজতেমায় আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে টঙ্গী থেকে ঢাকায় ৫ জোড়া আপডাউন বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে। এ ছাড়া প্রায় সকল আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন টঙ্গীতে যাত্রাবিরতি করবে।
বাড়তি মুসল্লিদের ঢল সামাল দিতে পুলিশের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ পরিকল্পনা। এরই অংশ হিসেবে শনিবার রাত থেকে পরদিন বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোগড়া বাইপাস-টঙ্গী, আব্দুল্লাহপুর-টঙ্গী, মীরের বাজার-টঙ্গী এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে ট্রাফিক পুলিশ।
এ ব্যাপারে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক) মো. আলমগীর হোসেন জানান, আখেরি মোনাজাতে অনেক মুসল্লি হেঁটে ইজতেমাস্থলে আসেন। তাদের নিরাপত্তা ও যানজট নিরসনে মহাসড়কে বাড়তি পুলিশ সদস্য থাকবে। শুধু ইজতেমার মুসল্লিবাহী গাড়ি টঙ্গীর ইজতেমাস্থল যেতে পারবে। এ ছাড়া শনিবার রাত থেকে পরদিন বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোগড়া বাইপাস-টঙ্গী, আব্দুল্লাহপুর-টঙ্গী, মীরের বাজার-টঙ্গী এলাকায় অন্যান্য যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
COMMENTS