রংপুর নগরীসহ জেলাজুড়ে দীর্ঘ কয়েক বছর পর দেখা দিয়েছে চোখ ওঠা রোগের প্রাদুর্ভাব। এতে আক্রান্ত হচ্ছেন সব বয়সী মানুষ। তবে শিশুরা শিকার হচ্ছে বেশি।
স্থানীয়রা জানান, আগে প্রতিবছর চোখ ওঠা ছড়িয়ে পড়ত। তবে গত ৫ থেকে ৭ বছর ধরে এ রোগটি ছিল না। হঠাৎ করে আবারও চোখ ওঠা রোগ দেখা দেয়ায় চারিদিকে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।তবে চিকিৎসকরা জানান, চোখ ওঠা রোগ ভাইরাসজনিত। এটি মারাত্মক ছোঁয়াচেও বটে। এই রোগ হলে চোখ লাল, চুলকানো ও পানি পড়তে পারে। প্রদাহ বেশি হলে বা দু-এক দিনে না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
এদিকে চোখ ওঠা রোগ দেখা দেয়ায় রংপুর নগরীসহ জেলাজুড়ে চশমার দোকানগুলোতে চশমা বিক্রি আগের কয়েকগুণ তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। ঔষধের দোকান গুলোতে চোখের ডরপসহ বিভিন্ন ঔষধের চাহিদা বেড়েছে। এই সুযোগে অসাধূ ব্যবসায়ীরা ঔষধ ও চশমার দাম বৃদ্ধি করে দেয়। এর ফলে চড়া মূল্য দিয়ে এসব জিনিসপত্র কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। এনিয়েও চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।নগরীর সুপার মার্কেটের চশমার দোকানে কথা হয় তাজহাট আনছারীর মোড় এলাকার জাহিদ হোসেনের সাথে। তিনি জানান, তার পরিবারের স্ত্রী ও শিশু সন্তানের চোখ উঠেছে। এখন তিনিও আক্রান্তের ঝুঁকিতে রয়েছেন।শিশু তমা আক্তার জানান, তাদের পাশের বাড়ির এক শিশুর চোখ উঠেছে। ওই শিশুর সঙ্গে খেলাধুলা করায় তিনিও আক্রান্ত হয়েছে। বর্তমানে তাদের বাড়িতে চারজন আক্রান্ত আছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীসহ জেলার মধ্যে বেশী চোখ ওঠা রোগ দেখা দিয়েছে পীরগাছা, কাউনিয়া ও মিঠাপুকুর, পীরগঞ্জ উপজেলায়। এখানকার বিভিন্ন বয়সী মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। এতে নারী ও শিশুরাও রয়েছে।
মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক এম এ হালিম লাবলু জানান, বিভিন্ন কারণে চোখের রোগ হতে পারে। বিশেষ করে চোখ লাল হয়ে চুলকালে মনে করতে হবে অ্যালার্জির কারণে এমনটি হয়েছে। আবার ভাইরাসজনিত কারণেও চোখ লাল, পানি পড়া ও চুলকাতে পারে। এ ধরনের রোগকে বলা হয় কনজাংটিভাইটিস বা চোখ ওঠা। আক্রান্তদের চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
এব্যাপারে রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. শামীম আহমেদ জানান, চোখ ওঠা মারাত্মক ছোঁয়াচে রোগ। আক্রান্তদের সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরা করা উচিত। আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে গেলে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, দিনে তিন থেকে পাঁচবার চোখে পানি দেওয়া ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। বেশি সমস্যা হলে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
COMMENTS