নবরূপে সেজেছে রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক)। দৃষ্টিনন্দন প্রবেশ ফটক আর মনোরম সাজে সাজানো ফোয়ারা চত্বরটি নজর কাড়ছে সবার।
নগর ভবনের মনোমুগ্ধকর পরিবেশ দেখে সেবা নিতে আসা মানুষজন থেকে শুরু করে সাধারণ দর্শনার্থীরাও খুশি। বিশেষ করে নবনির্মিত ফোয়ারা চত্বরে হরেক রংয়ের পানির খেলা, সবুজে ঘেরা ফুল বাগান, গাছগাছালি আর বসার ব্যবস্থায় অবিভূত নগরবাসী। কেউ কেউ রসিক মেয়রের প্রশংসাও করেছেন। তবে শুধু নগর ভবনই নয়, পুরো মহানগরী এমন সুন্দর ও পরিকল্পিত সাজে দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তোলার দাবি সচেতন মহলের।
নগর ভবনের প্রবেশ ফটক পার হতেই ফোয়ারা চত্বরটি নজর কাড়ে। দৃষ্টিনন্দন ও মনোরম সাজে সাজানো হয়েছে ফোয়ারাটি। গোলাকার এ চত্বরের চারদিকে গ্রিল দিয়ে ঘেরাও দেওয়া হয়েছে। প্রবেশ ও বাইর হতে দুটি গেট রয়েছে। ভেতরে বসে বিশ্রাম নেওয়া বা গালগল্প আড্ডাসহ সময় কাটানোর জন্য রয়েছে ১২টি বসার স্থান। সম্পূর্ণ অত্যাধুনিক ও রুচিসম্মত উন্নতমানের এ চত্বরের আকর্ষণ রঙিন ফোয়ারায় পানির ঝলকানি।
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেই শুরু হয় ফোয়ারার লাল-নীল-সবুজ রংয়ের পানির ঝলক। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফোয়ারার নবরূপ দেখতে ভিড় করছেন সাধারণ দর্শনার্থীর। এই ফোয়ারা চত্বরের ভেতরে ও বাইরে হাঁটার জন্য রাস্তা রয়েছে। সৌন্দর্য বর্ধনে আছে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলসহ অন্যান্য গাছের সবুজের সমারোহ। নগর ভবনে সেবা নিতে আসা অনেককেই ফোয়ারা চত্বরের ভেতরে বসে সময় কাটাতে দেখা যায়।
সেখানে শিপুল ইসলাম নামে এক তরুণের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠার দশ বছর পর নগর ভবনে আমরা একটা নতুন ও দৃষ্টিনন্দন প্রবেশ ফটক পেয়েছি। এখন নতুন সংযোজন ফোয়ারা চত্বর। সবকিছু মিলে আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন পরিবেশটা বেশ উপভোগ্য মনে হচ্ছে। চত্বরের ভেতরের ফুল বাগান, বসার ব্যবস্থা সত্যি প্রসংশনীয়। দেরিতে হলেও এমন সুন্দর পরিবেশ উপহার দেওয়ার জন্য মেয়রের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।
আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, বর্তমানে যেখানে ফোয়ারা চত্বর বানানো হয়েছে, আগে এর চারপাশের পরিবেশ ভালো ছিল না। ময়লা পড়ে থাকতো। কখনো আবর্জনাবহন করা গাড়ি রাখা হতো। নগর ভবনে আসা লোকজন সেখানে মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য বাহনও রাখতো। এখন পরিবেশটা আগের মতো নেই। সবকিছু একেবারেই নতুন করে সাজানো হয়েছে। চত্বরের পরিবেশটা এখন উপভোগ্য করায় আমরা খুব খুশি।
নগর ভবনে দেখা হয় সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন রংপুর মহানগর কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ ফখরুল আনাম বেঞ্জুর সঙ্গে। তিনিও ফোয়ারা চত্বরের নতুনরূপ দেখে প্রসংশা করে বলেন, এটি খুবই ভালো কাজ। খোলামেলা পরিবেশ। বড় গাছের নিচে ছায়ায় বসে কথাবার্তা বলা যাবে। সবুজ গাছগাছালি থাকায় পরিবেশটা সুন্দরভাবে উপভোগও করা যাবে। তবে এই চত্বরের রক্ষণাবেক্ষণ ঠিক মতো করতে না পারলে এটি নগরবাসীর কোনো কাজে আসবে না। আমরা চাই নগর ভবনের মতো আমাদের পুরো শহরটা গোছালো ও দৃষ্টিনন্দন হোক। পুরো নগরজুড়ে এমন সুন্দর সুন্দর স্থাপনা নির্মাণ করা হোক।
এই ফোয়ারাটিসহ চত্বরের রাস্তা, ড্রেন, টাইলস, গ্রিল, বাগানসহ সৌন্দর্য বর্ধনের অন্যান্য কাজগুলো করেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডরিক ডেভলোপারস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাইফুল ইসলাম জানান, দৃষ্টিনন্দন এই ফোয়ারা চত্বরটি সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে নির্মাণ করা হয়েছে। এটি নির্মাণে ৫৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।
এ ব্যাপারে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের (রসিক) মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, শুধু ফোয়ারা চত্বরটি নয়, আমরা নগর ভবনের সৌন্দর্য বর্ধনের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে একটি অত্যাধুনিক ও রাজসিক ফটক নির্মাণ করেছি। নতুন ফোয়ারা চত্বরটি জনসাধারণের স্বার্থে তৈরি করা হয়েছে। এখানে চলাচলের রাস্তা রয়েছে। যেন ১২ মাসই ফুল ফোটে এমন বিভিন্নজাতের গাছগাছালি লাগানো হয়েছে। লাইটিং ব্যবস্থাও রয়েছে। পুরো ফোয়ারা চত্বরটি দৃষ্টিনন্দন করে সাজানো হয়েছে।
COMMENTS