আশিকুর রহমান, নরসিংদী
স্কুলে যাতায়ত ও টিফিনের টাকা জমিয়ে অনাবাদি জমিতে সবজি চাষ করে সফলতা অর্জন করেছেন নরসিংদীর ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া মারুফ মিয়া (১৩) নামে এক স্কুল ছাত্র। ছোটবেলা থেকেই সে পড়াশোনার পাশাপাশি বাবাকে কৃষি কাজে সহযোগিতা করতেন। এরপর থেকেই তার নেশা কৃষি কাজের প্রতি।
মারুফ হোসেন শিবপুর উপজেলার বাঘাব ইউনিয়নের জয়মঙ্গল গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে। ৪ ভাই-বোনের মধ্যে সে সবার ছোট। পড়াশোনা করেন স্থানীয় বাঘাব ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে। বাবা পেশায় কৃষক হওয়ার সুবাদে পড়াশোনার পাশাপাশি বাবার সঙ্গে করেন কৃষিকাজ। নিজেদের জমির সঙ্গে অন্যের জমিও লিজ নিয়ে শুরু করেন বিভিন্ন রকমের সবজির চাষ। এরমধ্যে প্রায় ১২ শতাংশ জমি দীর্ঘদিন পড়ে ছিল অনাবাদী হয়ে। ওই জমিতে বছরের পর বছর হয়নি কোনো চাষাবাদ। পড়ে থাকা অনাবাদি জমিটি কঠোর পরিশ্রম করে চাষের উপযোগী করে তুলেন। ওই জমিতে এ বছর প্রায় ১১ শ ফুলকপি ও বাঁধাকপির চারা লাগিয়ে চাষাবাদ করছেন তিনি।
মারুফের বাবা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আগে এ জমিতে কোনো ফসল হতো না। দীর্ঘদিন জমিটি পতিত পড়ে ছিল। স্কুলে যাওয়া-আসা ও টিফিনের টাকা জমিয়ে সে সবজি চাষের সিদ্ধান্ত নেয় এবং এবারই প্রথম ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ করেন। প্রতিদিনই সে লেখাপড়ার পাশাপাশি সবজির পরিচর্যা করেন। আশাকরি আল্লাহ চায় তো তার পরিশ্রমের ফলে ফুলকপি ও বাঁধাকপির ভাল ফলন হবে।
মারুফ মিয়া বলেন, বাবাকে দীর্ঘদিন ধরে কৃষি কাজে সহায়তা করার অভিজ্ঞতা থেকে আমি কৃষি কাজে আগ্রহ প্রকাশ করি। আমাদের এই ১২ শতাংশ জমিটি বহুবছর ধরে অনাবাদি হয়ে পড়েছিল। বর্তমানে বাজারে সবজির তীব্র সংকট এবং সবজির চাহিদা মেটানোর আগ্রহ থেকেই স্কুলে যাওয়ার ভাড়া ও টিফিনের টাকা জমিয়ে হাট থেকে সবজির চারা ক্রয় করে এনে রোপন করি। জমিটি দীর্ঘদিন পড়ে থাকার কারণে অধিক পরিশ্রম করতে হয়েছে। এখন মাশাল্লাহ রোপন করা চারা বেড়ে ওঠতে শুরু করেছে। অল্প কয়েকদিনের মধ্যে ফলন শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, আমার ইচ্ছে পড়াশোনা শেষ করে বাবার মতো একজন কৃষক হয়ে সবজি উৎপাদন করে পরিবার এবং দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করবো।
COMMENTS