![]() |
| ছবি: সংগৃহীত |
এনএনবি, বাগেরহাট
বাগেরহাটের শরণখোলায় মুরগি চুরির অপবাদে মা ও মেয়েকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ধানসাগর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তপু বিশ্বাসের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই, ২০২৪) সকাল ৯টায় উপজেলার আমড়াগাছিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতিত কিশোরী ও তার মা বাগেরহাট ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
শনিবার (২৭ জুলাই, ২০২৪) বিকেলে হাসপাতালে নির্যাতিত কিশোরী (১৪) বলেন, ‘আমার মা অনেকদিন ধরে অসুস্থ। বৃহস্পতিবার সকালে মায়ের ওষুধ কিনতে বাজারে যাওয়ার পথে স্থানীয় মাওলানা আশ্বাপ আলী আমাকে ডেকে তার বাড়ির মধ্যে নেয় এবং মুরগি চুরি করেছি বলে মারধর করেন। পরে ধানসাগর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য তপু বিশ্বাসকে ডেকে নিয়ে আসে। তপু বিশ্বাস এসে কোনোকিছু না শুনেই প্রথমে লাঠি দিয়ে আমাকে মারধর করেন। পরে হাত-পা বেঁধে পায়ের তলায় পেটাতে থাকেন। একপর্যায়ে আমার মা আসলে, তাকেও বেঁধে মারধর করেন তপু বিশ্বাস। একপর্যায়ে আমার বোরকা ছিঁড়ে ফেলে এবং আমার গায়ে হাত দেয়।’
নির্যাতিত কিশোরী আরও জানান, ‘মুরগি চুরির জরিমানা হিসেবে আমাকে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে, না হলে আবারও মারধর করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। মারধর শেষে আমার গলায় ধারালো দা ধরে মুরগি চুরি করেছি বলে স্বীকারোক্তি দিতে বলে। বাধ্য হয়ে প্রাণ বাঁচাতে আমি মুরগি চুরি করেছি বলে স্বীকারোক্তি দেই।’
নির্যাতনের শিকার কিশোরী বলেন, ‘আমি কখনও মুরগি চুরি করিনি। আমাকে অন্যায়ভাবে মারধর করা হয়েছে। আমি এই অন্যায়ের বিচার চাই।’
নির্যাতনের শিকার কিশোরীর মা লাইলি বেগম বলেন, ‘ইউপি সদস্য তপু বিশ্বাস আমার মেয়েকে মারধর করেছে। আবার ডেকে নিয়ে আমাকেও মারধর করছে। মেয়েকে যেভাবে পিটিয়েছে তা কোনও মা সহ্য করতে পারে না। আবার আমাদের কাছে ৫০ হাজার টাকা চেয়েছে, আমরা এ অন্যায়ের বিচার চাই।’
এদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য তপু বিশ্বাস বলেন, ‘স্থানীয়রা মুরগি চোর ধরেছে বলে আমাকে খবর দেয়। ঘটনাস্থলে অনেক লোকজন ছিল। আমি থানার ওসিকে ফোন করেছিলাম। তিনি বলেছেন স্থানীয়দের নিয়ে মীমাংসা করতে। ঘটনাস্থলে যারা ছিল তাদের সমন্বয়ে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরে শুনি, তারা রাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আসলে তাদের নির্যাতন করা হয়নি।’
বাগেরহাট ২৫০ শয্যা হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডা. পার্শা সানজানা বলেন, ‘নির্যাতনের শিকার মা-মেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। আমরা তাদেরকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়েছি। তাদের অবস্থা এখন কিছুটা ভালো।’
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম কামরুজ্জামান খান বলেন, ‘ঘটনা শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কেউ কোনও অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

COMMENTS